চরম সমস্যার মুখে রোগীরা। এই গরমে তীব্র রক্ত সংকটের মুখে পড়তে হচ্ছে রোগীর আত্মীয়দের। ৪৩ ডিগ্রি গরম মাথায় নিয়েই শহরের এক ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে অন্য ব্ল্যাড ব্যাঙ্কে একটু রক্তের খোঁজে ঘুরে চলেছেন মানুষজন। এক ইউনিট রক্ত পেতে রীতিমত কালঘাম পোহাতে হচ্ছে রোগীর আত্মীয়দের।
তীব্র গরম আর ভোট আবহে শহরের বিভিন্ন ব্লাড ব্যাঙ্কের ভাঁড়ার একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁদের। ফি বছরই রাজ্যে গ্রীষ্মে রক্ত সংকট মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। এবারের রেকর্ড গরমে রক্ত সংকটও চরমে। এক ইউনিট রক্তের সন্ধানে সকাল থেকে নাওয়া খাওয়া ভুলে তীব্র দাবদাহকে মাথায় নিয়েই একটু রক্তের সন্ধানে শহরের বিভিন্ন ব্লাড ব্যাঙ্কে উপচে পড়ছে ভিড়। কিন্তু রক্ত কোথায়? কারুর তিন ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয় তাহলে মেরেকেটে এক ইউনিট রক্তের জোগান দিয়েই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরা। অনেক ক্ষেত্রে কার্ড থাকলেও ডোনার ছাড়া রক্ত না দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে শহরের একাধিক ব্লাড ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে।
রক্ত সংকটে দিশাহীন হয়ে পড়েছে রোগী ও তাদের আত্মীয় পরিজনরা। এর পিছনের মূল কারণই হিসেবে জানা যাচ্ছে, রক্তদান শিবির না হওয়া ও দিনদিন রক্তের চাহিদা বেড়ে যাওয়া। হুগলী থেকে মানিকতলা সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্কে তিন ইউনিট রক্তের সন্ধানে সকাল থেকে ঘুরছেন বেচারাম মৈত্র। কিন্তু কোথায় রক্ত? অবশেষে রক্ত দানের মাধ্যমে এক ইউনিট রক্তের আশ্বাস মেলে ব্লাড ব্যাঙ্কের তরফে। বেচারাম বলেন, 'রোগী ভর্তি রয়েছেন ব্যারাকপুরের এক হাসপাতালে। সেখানেই রোগীর অস্ত্রপচার হয়েছে। হাসপাতাল থেকে তিন ইউনিট রক্ত চাওয়া হয়। প্রথমে সাগর দত্ত হাসপাতাল পরে আর.জি.কর হাসপাতালে গিয়েও রক্ত না মেলায় অবশেষে মানিক তলা ব্লাড ব্যাঙ্কে হাজির হয়েছি। অনেক অনুনয়-বিনয়ের পর এক ইউনিট রক্ত দিতে রাজি হয়েছে কর্তৃপক্ষ'। পাশাপাশি তার প্রশ্ন, 'সাধারণ মানুষ পরিষেবা না পেলে এত ব্লাড ডোনেশান ক্যাম্প করার মানে কী? কোথায় যাচ্ছে এত বিপূল পরিমাণ রক্ত? তাহলে খোলা বাজারে চড়া দামে সেই রক্ত বিক্রি হচ্ছে', প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
এদিকে রক্তের চাহিদা ও সংকট প্রসঙ্গে ESI মানিকতলা ব্লাড সেন্টারের অধিকর্তা ডাঃ মহঃ আজাহারউদ্দিন বলেছেন, 'প্রতি বছরের ন্যায় এবার গরমেও রক্তের সংকট চরমে। আমরা নিজেরাই ও বিভিন্ন হাসপাতালের তরফে রক্ত দানের আয়োজনের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা আশাবাদী পরিস্থিতি খুব শীঘ্রই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে'।