টেট দুর্নীতি মামলায় আরও এক নজিরবিহীন নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। দুর্নীতির জন্য নানা টালবাহানায় পরীক্ষার্থীদের চাকরির বয়স পেরিয়ে গেলে তাঁদের দায় নিতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকেই, সোমবার একথা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এরই পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে এদিন রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকেও আরও একবার তুলোধনা করেছেন বিচারপতি।
উল্লেখ্য, দুর্নীতির কারণেই যোগ্য হয়েও চাকরি পাননি বলে অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক চাকরিপ্রার্থী। ওই চাকরিপ্রার্থী আদালতে দাবি করেন, টেটের পরীক্ষায় ভুল প্রশ্ন দেওয়া হয়েছিল। সেক্ষেত্রে পরে তাঁর নম্বরও বেড়েছে। কিন্তু শুধুমাত্র চাকরির জন্য নির্দিষ্ট বয়সসীমা পেরিয়ে যাওয়ার কারণেই তাঁকে ইন্টারভিউয়ে ডাকা হয়নি। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ভুলের মাশুল তাঁকে গুণতে হচ্ছে বলে আদালতে দাবি করেন ওই চাকরিপ্রার্থী।
সেই মামলার শুনানিতেই এদিন রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে কড়া ভাষায় ভর্ৎসনা করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ভুলের কারণেই ওই চাকরিপ্রার্থী বঞ্চিত হয়েছেন, তাই তাঁদেরই ওই চাকরিপ্রার্থীর দায় নিতে হবে।
আরও পড়ুন- ২০২৪-এই কংগ্রেস-তৃণমূল জোট? ঘাস-ফুল সাংসদের মন্তব্যে জোরাল ইঙ্গিত
২০১৪-এর টেট পরীক্ষায় ভুল প্রশ্ন দেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই হুলস্থূল পড়ে গিয়েছিল। শেষমেশ চাকরিপ্রার্থীদের ৬ নম্বর করে বাড়ানো হয়েছে। মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীর দাবি, ২০১৪ সালের টেটে পাশ করতে পারেননি তিনি। তবে ২০১৬ সালে প্রশ্নে ভুল নিয়ে মামলা হলে তাঁরও ৬ নম্বর বাড়ানো হয়। সেক্ষেত্রে উত্তীর্ণ হন তিনি। কিন্তু ততদিনে চাকরির জন্য নির্দিষ্ট বয়সসীমা পেরিয়ে গিয়েছেন তিনি। বয়স পেরিয়ে যাওয়ার কারণে তাঁকে ইন্টারভিউয়ে ডাকা হয়নি বলে আদালতে জানান ওই চাকরিপ্রার্থী।
তাঁর সেই বক্তব্যের প্রেক্ষিতেই এদিন আরও একবার রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে তুলোধনা করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এদিন বলেন, ''কয়েকজন আধিকারিকের অপদার্থতায় যোগ্যরা বঞ্চিত হচ্ছেন।'' এরই পাশাপাশি প্রয়োজনে বয়স পেরিয়ে যাওয়া এই ধরনের চাকরিপ্রার্থীদের জন্য আলাদা করে ইন্টারভিউ বোর্ড গঠন করার কথাও বলেছেন তিনি।