সরকারি চাকুরী ও এক্সপোর্ট ইমপোর্টের ব্যবসার আড়ালে প্রানী দেহাংশ পাচারের ছক বানচাল করে দিলো রাজ্য বন দপ্তরের টাস্ক ফোর্স। ভুটান থেকে নেপালে পাচারের পথে ডুয়ার্সে উদ্ধার হলো আনুমানিক ৫০ লক্ষ টাকা মূল্যের গন্ডারের খড়্গ ও হাতির দাঁত। গ্রেফতার হলো তিনজন আন্তর্জাতিক প্রানীদেহাংশ পাচারকারী। শুধু তাই নয়, ঘটনায় জড়াল আসামের বোড়ো গোষ্ঠীর নামও।
আরও একবার গোপন খবরে বড়সড় সাফল্য পেল টাস্ক ফোর্স। শনিবার দুপুর থেকে সাদা পোশাকে ডুয়ার্সের নাগরাকাটার শুল্কাপাড়া এলাকায় টাস্ক ফোর্সের টিম নিয়ে লুকিয়ে ছিলেন টাস্ক ফোর্স প্রধান সঞ্জয় দত্ত। রাতের দিকে নির্দিষ্ট নম্বরের গাড়িটি রাতা পার করতেই গাড়ির পিছনে ধাওয়া করে টাস্ক ফোর্স এর টিম। শুল্কাপাড়া এলাকায় দাড় করানো হয় ভুটানের লাইসেন্স প্লেট বসানো (BP-2-A/5173) গাড়িটিকে। গাড়িতে বসে থাকা তিন ভুটানি নাগরিকের ব্যাগ তল্লাশি করতেই উদ্ধার হয় গন্ডারের খড়গ ও হাতির দাঁত।
আরও পড়ুন: গরুমারায় খড়্গবিহীন গণ্ডারের মৃতদেহ, আশঙ্কা পোচিংয়ের
পরে সঞ্জয়বাবু জানান, "গতকাল আমার কাছে খবর আসে, ডুয়ার্সের শুল্কাপাড়া মোড় দিয়ে সন্ধ্যার পর একটি ভুটানের গাড়ি করে ৫০ লক্ষ টাকার গন্ডারের খড়গ ভুটান থেকে নেপালের কাঠমান্ডুতে পাচার করা হবে। আমি বিষয়টি ডিএফও বৈকুন্ঠপুরকে জানাই। ডিএফও উমা রানীর নির্দেশে দুপুরেই টিম নিয়ে শুল্কাপাড়া এলাকায় অপেক্ষা করতে থাকি।"
এরপরে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত গভীর হয়। কুয়াশার চাদর মুড়ে ফেলে ডুয়ার্সকে। সঞ্জয়বাবুর কথায়, "হঠাৎ দেখি, ঐ গাড়িটি আমাদের সামনে দিয়ে দ্রুত গতিতে বেড়িয়ে যাচ্ছে। অ্যাডভান্স টিমকে অ্যালার্ট করা হয়। আমরাও পিছু ধাওয়া করে দাঁড় করাই গাড়িটিকে। গাড়ির ভেতরে বসে থাকা তিনজন ভুটানির ব্যাগ সার্চ করতেই উদ্ধার হয় গন্ডারের শিং ও একটি হাতির দাঁতের অংশ। একই সাথে উদ্ধার হয় বেশ কিছু চেকবই, ছুরি ও অন্যান্য কাগজ। আমরা শিং ও দাঁতের টুকরো পরীক্ষার জন্য জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার দপ্তরে পাঠাবো।"
তিনি আরো জানান, "ধৃত তিনজনকে জেরা করে আমরা জানতে পেরেছি, এদের মধ্যে একজন লাইব্রেরিয়ান, ভুটান সরকার পরিচালিত জিগমে শেরাপ লিয়াং সেন্ট্রাল স্কুলে কর্মরত। বাকী দুজন ভুটানের সরকারি ঠিকাদার, আমদানি-রপ্তানি ও ট্রান্সপোর্ট ব্যবসার সাথে জড়িত।"
সঞ্জয়বাবুর আরো দাবি, জেরায় ওই তিনজন স্বীকার করেছে যে তারা আসামের বোড়োদের কাছ থেকে সমস্ত দেহাংশ যোগাড় করেছে। এগুলিকে শিলিগুড়ি হয়ে কাঠমন্ডুতে পাচার করার কথা ছিলো। ধৃতদের আজ জলপাইগুড়ি আদালতে তুলে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়।