রেকর্ড বিক্রিতে লক্ষ্মীলাভ। রমরমিয়ে কেটে গেল বইমেলার ক'টা দিন। ৪৬ তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার ঝুলিতে এল কোটি কোটি টাকা। রবিবারই শেষ হল ৪৬ তম কলকাতা বইমেলা। গত ৩০ জানুয়ারি সল্টলেকের বইমেলা প্রাঙ্গণে ৪৬তম কলকাতা বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোভিড পর্বের ধাক্কা কাটিয়ে ছন্দে ফিরেছে বইমেলা।
উদ্বোধনের পরই থেকেই বইমেলায় বইপ্রেমী মানুষজনের উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়ে। আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন হওয়ার একদিন পর ৩১ জানুয়ারি দুপুর ১২টা থেকে বইমেলা প্রাঙ্গণ খুলে দেওয়া হয় সাধারণের উদ্দেশ্যে । বইমেলায় এবার কত কোটি টাকার বই বিক্রি হল, তা জেনে তাক লাগতে বাধ্য। এবারের কলকাতা বইমেলায় ২৫ কোটি টাকার বেশি বই বিক্রি, ভিড় জমিয়েছে ২৬ লাখ মানুষ। আয়োজকদের তরফে জানানো হয়েছে ৪৬ তম কলকাতা বইমেলায় এবারের লক্ষ্মীলাভ ২৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার বই।
পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব চ্যাটার্জি জানিয়েছেন, ৩১ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া বইমেলায় ভিড় করেছেন ২৬ লক্ষের বেশি মানুষ। বইপ্রেমী মানুষদের ঢল নামায় আয়োজকদের মুখেও চওড়া হাসি। ১২ ই ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ গতকালই শেষ হয়েছে এই বছরের বইমেলা। ত্রিদিব বাবু আরও বলেন, ১৯৭৬ সালে শুরু হওয়া বইমেলার ইতিহাসে এটা রেকর্ড। গত বছর বইমেলায় ভিড় জমিয়েছিলেন ২৪ লাখ মানুষ। এবারের বইমেলা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। ২৬ লক্ষ বইপ্রেমী মানুষের ভিড়ে গমগম করে ওঠে এবারের বইমেলা। অতিমারির আতঙ্ক কাটিয়ে মানুষজন প্রবল উৎসাহে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। ডিজিট্যাল জমানাতেও লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম এবং সঙ্গে কোটি কোটি টাকার বই বিক্রির খবরে রীতিমত বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস ধরা পড়েছে বইপ্রেমীদের মধ্যেও।
তিনি আরও বলেন, "আমরা জনসাধারণের প্রতিক্রিয়ায় খুব খুশি। বইমেলার ইতিহাসে এটা একটা রেকর্ড,”! গিল্ডের সভাপতি সুধাংশু শেখর দে বলেন, 'বই মেলার সব স্টলে বিক্রি ৬-১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা গর্বের"। মেলায় বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে ৭০টি স্টল ছাড়াও ৯৫০টি স্টল ছিল। স্পেন ছিল থিম কান্ট্রি। আগামী বছরই একইসময় সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কে অনুষ্ঠিত হবে বইমেলার বড় ঘোষণা করেন গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব চ্যাটার্জি।
তাঁর কথায়, “শুধুমাত্র গত বছর, কিছু পরিস্থিতির কারণে, আমাদের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি থেকে পিছিয়ে মার্চে নিয়ে যেতে হয়। যদিও ২০২১ সালে অতিমারি পরিস্থিতির কারণে মেলা অনুষ্ঠিত হতে পারেনি,”। রবিবার 'শেষের অনুষ্ঠানে' মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, "বইমেলা দুর্গাপূজার মতো বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির আরেকটি অঙ্গ।" তিনি দাবি করেন মেলায় রেকর্ড মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করে"বাংলার মানুষ দেশের অন্যতম শিক্ষিত মানুষ"। কলকাতা বইমেলার আয়োজকরা দিল্লিতেও একই ধরনের বইমেলার আয়োজন করবেন বলে জানান তিনি।