প্রায় শতাব্দী প্রাচীন হাওড়ার ‘বড় ঘড়ি’! বেড়াতে যাচ্ছেন অথবা নিজের কোন কাছের মানুষের সঙ্গে প্রথমবার দেখা করতে হাওড়া স্টেশনে এলেই প্রথমেই যে নামটি সামনে আসবে সেটা হল হাওড়া স্টেশনের বড় ঘড়ি। সেই ঔপনিবেশিক আমল থেকে পথ চলা শুরু করে পরিবর্তনের সাক্ষী থেকেছে এই ‘আইকনিক’ বড় ঘড়ি। চলতি বছরই ৯৭ পূর্ণ করেছে আইকনিক এই ঘড়ি৷ হাতঘড়ির চল ডিজিট্যাল জমানায় কমে গেলেও লন্ডনের জেন্টস কোম্পানির তৈরি ঘড়িটার সেই জনপ্রিয়তা এতটুকুও কমেনি।
দু’মুখো ডায়ালের একটা দিক স্টেশনের ১ থেকে ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে ঘোরানো। অন্যটা ঘোরানো ৯ থেকে ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে। ঘণ্টার কাঁটা লম্বায় ১৮ ইঞ্চি আর মিনিটের কাঁটা লম্বায় ২৪ ইঞ্চি। পূর্ব রেল সূত্রে খবর, “৯৭ বছর পেরিয়েও কিন্তু কর্তব্যে অবহেলা নেই একফোঁটাও। এই বয়সেও দিব্যি সুস্থ,একেবারে সতেজ রয়েছে ‘আইকনিক’ এই বড় ঘড়ি। দম দিতে হয় না। বিশেষ ধরনের পালসার যন্ত্রে রেডিও সিগন্যাল পাঠিয়ে সেটিকে চালু রাখা হয়। সময়ও মেলানো হয় ওই পদ্ধতিতে।”
ব্রিটেনের জেন্টস কোম্পানি এই ঘড়ির তৈরি করলেও কলকাতার বিখ্যাত ঘড়ি ব্যবসায়ী দেবপ্রসাদ রায়ের সংস্থা মেসার্স রায় ব্রাদার্স অ্যান্ড কোং হাওড়া স্টেশনে এই ঘড়িটিকে স্থাপন করেন। পরে দীর্ঘ ইতিহাসের সাক্ষী থেকেছে হাজারো মানুষ আর তার বড় ঘড়ি। আবেগের গভীরতা এবং প্রেমের বিভিন্ন পর্যায়ের সাক্ষী থেকেই এই আইকনিক ঘড়িটি। লক্ষ লক্ষ দম্পতিকে নিঃশর্তভাবে ভালবাসার জোয়ারে ভেসে যেতে পথ দেখিয়েছে এই বড়ঘড়ি। সাক্ষী থেকেছে বহু সম্পর্ক বিচ্ছেদেরও। তাও এই বয়সে সুস্থ সতেজ থেকে নিখাদ বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে আজও একই ভাবে হাজার হাজার মানুষের ভরসা এই বড়ঘড়ি।
অনুরূপ একটি ‘টুইন ফেসড’ ঘড়ি জেন্টস কোম্পানি তৈরি করেছে, যার ডায়াল সাইজ ৬ ফুট। হাওড়া স্টেশনের বাইরেই বসানো সেই দুমুখো ডায়ালের ঘড়িটির একটা দিক হুগলি নদীর দিকে এবং অন্যটি হাওড়া বাস স্ট্যান্ডের দিকে।