জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন দক্ষিণ মেন্দাবাড়ি এলাকায় জঙ্গলের গা ঘেঁষে রমরমিয়ে চলছে ইটভাটা। গত কয়েক মাস ধরে এই কাণ্ড শুরু হলেও, বিষয়টি নিয়ে সম্পূর্ণ উদাসীন প্রশাসন। প্রশাসনিক আধিকারিকরা প্রায় সকলেই এমন ইটভাটার অস্তিত্ব সম্পর্কেই অবহিত নন বলে দাবি করেছেন। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমের কাছেই জেনেছেন বনমন্ত্রীও।
সম্প্রতি জলপাইগুড়ি জেলার বাসিন্দা এক পরিবেশকর্মী এ নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। সেখান থেকেই বিষয়টি প্রথম জানাজানি হয়। জানা গিয়েছে, বড় ইট ভাটার মতো কোনও বিশালাকার চুল্লি নেই এই ইটভাটায়। সামান্য মাটি খুঁড়ে সেই মাটি ঢিপি করে তোলা হচ্ছে। সেই ঢিপির নিচেই পোড়ানো হচ্ছে ইট। সাধারণ ইটভাটায় যেমন কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়, এখানে তেমন করে ইট পোড়ানো হচ্ছে না। তার বদলে ইট পোড়ানোর জন্য ব্যবহৃক হচ্ছে কাঠ। এ ধরনের ইটভাটাগুলি বাংলা ভাটা নামে পরিচিত।
আরও পড়ুন, তোলাবাজি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বিবাদ: রামপুরহাটের মহকুমাশাসক বদলি
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের আধিকারিক (AWLW) বিমল দেবনাথ জানিয়েছেন, গত দু মাস ধরে এই ইটভাটা চলছে। তাঁর বক্তব্য, "যেহেতু এটা আমাদের এলাকার মধ্যে পড়ে না, তাই আমাদের খুব বেশি কিছু করার নেই। তবে দূষণ নিশ্চিত ভাবে হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।"
বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে প্রথমে জানতে চাওয়া হয় ব্লক ভূমি সংস্কার দফতরের কাছে। বিএলআরও দীপংকর পিপলই জানান, "এই ইটভাটার খবর আমার কাছে নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। প্রয়োজনীয় অনুমতি না থাকলে ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়া হবে।"
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছিল জেলাশাসকের কাছেও। জেলাশাসক নিখিল নির্মল জানান, "এই বিষয়ে তাঁর কাছে কোনো খবর নেই। কীভাবে এই ভাটা চালু হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে।"
শেষ পর্যন্ত বিষয়টি জানতে চাওয়া হয় বনমন্ত্রীর কাছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ইটভাটার অনুমতি দিই না। এ ব্যাপের আপনারা জেলাশাসকের কাছে খোঁজ নিন।’’
এ ঘটনার কথা যিনি সবার আগে জনসমক্ষে আনেন, সেই বিশ্বজিৎ দত্তচৌধুরী বলেন, ‘‘কীভাবে এই ইটভাটা চালু হল তা নিয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। অবিলম্বে এই ভাটা বন্ধ না হলে পরিবেশের সমূহ ক্ষতি হবে।’’
আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা আলিপুরদুয়ার তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মোহন শর্মা জানিয়েছেন, ‘‘এ ধরনের কোনও ইটভাটার খবর আমাদের কাছে নেই।’’ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনিও।