BSF: দিনে দিনে বাড়ছে অনুপ্রবেশ, ৮ বছরেও বাংলার এই সীমান্তে কাঁটাতার দিতে পারল না BSF

Unfenced border: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের এই অংশে কাঁটাতার লাগানোর জন্য রাজ্যই জমির ব্যবস্থা করে দেয় বিএসএফকে। জমি পেয়েও কাঁটাতার লাগানোর কাজ করেই উঠতে পারেনি সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

Unfenced border: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের এই অংশে কাঁটাতার লাগানোর জন্য রাজ্যই জমির ব্যবস্থা করে দেয় বিএসএফকে। জমি পেয়েও কাঁটাতার লাগানোর কাজ করেই উঠতে পারেনি সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

author-image
Mousumi Das Patra
New Update
BSF man ‘lynched’ for reprimanding man over uploading daughter’s video

প্রতীকী ছবি।

Border infiltration: ৮ বছর আগে সীমান্তের অরক্ষিত এলাকায় জমি কেনার কাজ শুরু হলেও এখনও কাঁটাতার দেওয়ার কাজ শুরু করতে পারল না BSF। আর তাতেই উদ্বিগ্ন সীমান্তবসী। ফলে রাজ্য সরকার জমি কিনে বিএসএফকে হস্তান্তর করলেও কাঁটাতার দেওয়ার ঢিলেমিতে হয়েই চলেছে অনুপ্রবেশ। জানা গিয়েছে, নদিয়ায় ৮ বছর আগে সীমান্তের অরক্ষিত এলাকায় জমি কেনার কাজ শুরু হয়। তবে আজও কাঁটাতার দেওয়ার কাজ শুরু করতে পারেনি বিএসএফ। 

Advertisment

এই বিষয়টি নিয়ে সীমান্ত অরক্ষিত এলাকার মানুষের মনে ক্ষোভ দানা বাঁধছে। প্রসঙ্গত নদিয়ার অরক্ষিত এলাকা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জালনোট, পাচার, জঙ্গিদের প্রবেশ, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সমস্যা রয়েছে। এই অবস্থায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের অরক্ষিত এলাকাগুলোয় কাঁটাতার দেওয়ার উদ্দেশ্যে বছর আটেক আগে জমি ক্রয় শুরু হয়। নদীয়াতে মোট অরক্ষিত এলাকা আছে ২৩.৭ কিমি। নদীয়ায় হোগলবেড়িয়া, মুরুটিয়া সহ তেহট্ট মহকুমাতে প্রায় সাড়ে আট কিমি, ভীমপুর থানার রাঙিয়াপোতা, মহাখোলা নিয়ে প্রায় ছ' সাড়ে কিমি, কৃষ্ণগঞ্জ থানা এলাকায় ২ কিমি, হাঁসখালি থানা এলাকায় ৩.৭ কিমি এলাকায় নদীর ওপর কাঁটাতার নেই। ধানতলা থানা এলাকায় প্রায় সাড়ে পাঁচ কিমি কোন কাঁটাতার নেই। এর বেশির ভাগে রয়েছে নদী। নদীয়ার কাঁটাতারহীন এলাকার মধ্যে নদী সাড়ে তেরো কিমি ও স্থল এলাকায় ১০.২ কিমি এলাকা আছে। 

এই এলাকাগুলোর মধ্যে জমিজট থাকায় আলোচনার মাধ্যমে জমি কেনার কাজ শুরু হয়। জমি কেনার বিষয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য দুপক্ষর সহমতের ভিত্তিতে কাজ করতে শুরু করেছিল। জেলা প্রশাসনের কাছে বিএসএফ তাদের জমির মাপজোক থেকে কতটা জমি প্রয়োজন তা জানায়। সেই মতো ল্যান্ড পারচেজ কমিটির সঙ্গে কোন জমি, কত পরিমাণ এ নিয়ে বিএসএফের আলোচনা হয়। বিএসএফ টাকা বরাদ্দ করলে জমির মালিকদের কাছ থেকে জমি কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। 

আরও পড়ুন- Kolkata News Live Update: করোনা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বাংলাতেও, পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুরু মক ড্রিল

Advertisment

একইসঙ্গে কেনা জমি বিএসএফকে হস্তান্তরও করা হয়। বর্তমানে কাঁটাতারের ওপারের অস্থির পরিস্থিতিতে সীমান্ত এলাকায় আতঙ্ক গ্রাস করেছে। বিএসএফের কড়া নজরদারির মধ্যেও অরক্ষিত এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশ হচ্ছে। রানাঘাট পি ডি এলাকায় কয়েক মাসে দু'শোর বেশি অনুপ্রবেশ হয়েছে। কৃষ্ণনগর পি ডি এলাকার মধ্যেও অনুপ্রবেশ শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় উদ্বেগ আতঙ্ক ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে সীমান্তের বিভিন্ন পেশায় মানুষরা জানিয়েছেন, সীমান্তে  দ্রুততার সঙ্গে কাঁটাতার দেওয়া হোক।

আরও পড়ুন- Wajahat Khan absconding: যার অভিযোগে শর্মিষ্ঠা গ্রেফতার সেই ওয়াজাহাতকেই খুঁজছে অসম-দিল্লির পুলিশ, মামলা কলকাতাতেও

দেশের নিরাপত্তার জন্য যা প্রয়োজন। ল্যান্ড পারচেজ কমিটি সূত্রে জানাগিয়েছে, নদীয়ায় কাঁটাতারের জন্য জমি ক্রয় উত্তরোত্তর বাড়ছে। একইসঙ্গে বিএস এফকেও হস্তান্তর করা হচ্ছে। নদীয়ার চাপড়া ব্লকের মহাখোলা ও উত্তর রাঙিয়াপোতা মৌজায় কাঁটাতারের জন্য জমি প্রয়োজন হয় ৩১,৮৬১ একর। এর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১৪ কোটি ১৭ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত জমি কেনা হয়েছে ২৩.৭৯ একর। 

এর জন্য খরচ হয়েছে ১০ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা। এই জমি বিএসএফকে হস্তান্তর করা হয়েছে। করিমপুরের বারুইপাড়া, দহখোলা, গান্ধীনা মৌজায় কাঁটাতারের জন্য জমি প্রয়োজন হয়েছে ৫.২৪ একর। এর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৮ কোটি ৭৭ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা। জমি কেনা হয়েছে ৪.৯৩ একর। এর মধ্যে বিএসএফকে হস্তান্তর করা হয়েছে ৪.৮ একর। রানাঘাটের বোনবেরিয়া, শ্রীরামপুর, কলুপুর মৌজায় কাঁটাতারের জন্য জমি প্রয়োজন হয় ৩৬.৩৭ একর। এর জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ ১৬ কোটি ৫৫ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা হয়েছে। জমি কেনা হয়েছে ৯.৪ একর।  ইতিমধ্যে বিএসএফকে হস্তান্তর করা হয়েছে প্রায় ৪.২৮ একর। কৃষ্ণগঞ্জের বিজয়পুর ও গেদে মৌজায় কাঁটাতারের জন্য জমি প্রয়োজন ২৩.০৪ একর।

আরও পড়ুন- Sundarbans: 'সুন্দরবন দিয়েই ঢোকার চেষ্টা জঙ্গিদের', তথ্য মিলতেই অনন্য তৎপরতা BSF-এর

এর জন্য বরাদ্দকৃত  অর্থ ১৩ কোটি ২০ লক্ষ ৯১ হাজার টাকা হয়েছে। এখানে জমি কেনা হয়েছে ১৮.২২ একর। এর মধ্যে বিএসএফকে হস্তান্তর করা হয়েছে ১৬.৯৫ একর। হাঁসখালি ব্লকে জমি ক্রয়ের জন্য ২০০ জমি মালিকের কাছে নোটিশও দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিএসএফের সূত্রে জানাগিয়েছে, কিছু জমি অধিগ্রহণ এখনও বাকি রয়েছে। তাই অধিগ্রহণ হয়ে গেলে ফেন্সিংয়ের কাজ হয়ে যাবে।'এ নিয়ে  বিএসএফের দক্ষিণ বঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের জনসংযোগকারী অফিসার এন কে পান্ডে বলেন, কাজ শুরু হয়েছে। একটু সময় লাগছে। খুব শীঘ্রই গোটা কাজটা হয়ে যাবে। কোন সমস্যা নেই।'

BSF India-Bangladesh Border Nadia