করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনে চড়ে বাবার সঙ্গে কেরালায় রাজমিস্ত্রির কাজে যাচ্ছিল ছেলে। বাড়ি ছাড়ার সময় সময় বছর ১৮-র ছেলে ছোট্টু সর্দার তাঁর মাকে বলে যায় য়ে, কেরালা থেকে গ্রামের বাড়িতে ফিরে সে পাকা বাড়ি তৈরি করবে। কিন্তু ছোট্টুর আর বাড়ি ফেরা হল না। করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় বাবা সুকলাল সর্দার জখম হয়ে কোনওমতে প্রাণে বেঁচলেও ছেলে ছোট্ট সর্দার অকালেই প্রয়াত। এই খবর শনিবার সকালে ছোট্টুর বর্ধমানের বাড়িতে পৌছাতেই গ্রামজুড়ে হাহাকার আর আর্তনাদ। শোক বিহ্বল পরিবার সদস্যরা।
ছোট্টু সর্দার দের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার করুই গ্রামে। পরিবারের লোকজনের কথায় জানা গিয়েছে, সুকলাল সর্দার দীর্ঘদিন ধরে কেরালায় রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। সংসারের একটু বেশি উপার্জনের আশায় এইবার প্রথম তিনি ছেলে ছোট্টুকে সঙ্গে করে কেরালায় নিয়ে যাচ্ছিলেন রাজমিস্ত্রির কাজ শেখানোর জন্য।
আরও পড়ুন- Coromandel Express Accident: ‘ভয়াবহ দৃশ্য, চিরকাল এ আতঙ্ক বয়ে বেড়াব’, দুর্ঘটনার বিভীষিকাময় বর্ণনা দিতে দিতে বলছিলেন ‘ভাগ্যবান’ যাত্রীরা
পরিবার সদস্যদের কথাও এও জানা যায় যে- সুকলাল সর্দার ও তাঁর ছেলে ছাড়াও করুই গ্রামের আরও দশ - বারো জন এক সঙ্গে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনে চড়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করার জন্য কেরালার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন। বছর চল্লিশের সঞ্জয় সর্দার, ববছর ৩৮ এর সুকলাল সর্দার, ৩৬ বছর বয়সী সৃষ্টি রায়, ২৭ বছরের সমির রায় এরা সকলেই শুক্রবার বেলা ৩ টের সময় শালিমার স্টেশন থেকে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেন ধরেন। মাঝপথে ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয় করমণ্ডল এক্সপ্রেস।
আরও পড়ুন- ‘ভয়াবহ দৃশ্য, চিরকাল এ আতঙ্ক বয়ে বেড়াব’, দুর্ঘটনার বিভীষিকাময় বর্ণনা দিতে দিতে বলছিলেন ‘ভাগ্যবান’ যাত্রীরা
৩৮ বছর বয়সী সুকলাল সর্দার ও ২৭ বছর বয়সী সমীর রায় গুরুতর জখম অবস্থায় এখন ওড়িশার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকিদের মধ্যে সঞ্জয় সর্দার, সৃষ্টি রায়ের এখনও পর্যন্ত কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। ছোট্টু সর্দারের বাবা বাড়িতে ফোন করে ছেলের মৃত্যু সংবাদের খবর জানান। ছেলে হারানোর খবর জানাজানি হতেই করুই গ্রামের সর্দার বাড়ির সবাই শুধু কেঁদেই চলেছেন। গোটা গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া।