Advertisment

মাস্টারমশাইকে প্রাণে মারার হুমকি! সুদ সহ বিশাল অঙ্কের ঋণের টাকা না মিলতেই বেপরয়া সুদকারবারীরা

তুলে নিয়ে গিয়ে রেললাইনে বেঁধে রাখার হুঙ্কার।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
burdwan katwa animesh sarkar interest business

অনিমেষ সরকারকে হুমকিকাণ্ডে ধৃতরা। ছবি- প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়।

চিকিৎসার জন্য চড়া সুদে ঋণ নিয়েছিলেন ৫ লক্ষ টাকা। যা বেড়ে গিয়ে এখন দাঁড়িয়েছে ১০ লক্ষ টাকায়। ।সেই টাকা শোধ করতে না পারায় স্কুল শিক্ষককে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকির অভিযোগ উঠেছে সুদ কারবারীদের বিরূদ্ধে। তাদের দুঃব্যবহার ও হুমকিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার স্কল শিক্ষক অনিমেষ সরকারের পরিবার। সেই অভিযোগ পেয়েই নড়ে চড়ে বসে কাটোয়া থানার পুলিশ। রবিবার রাতভর কাটোয়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ চার চড়া সুদের কারবারীকে গ্রেফতার করেছে ।

Advertisment

এসডিপিও (কাটোয়া)কৌশিক বসাক বলেন, 'বুড়ো প্রামানিক সহ নয় জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ পীযুষকান্তি দে, সন্দীপ কোনার, চঞ্চল কুমার দে এবং মৃণালকান্তি দে নামে চারজনকে গ্রেফতার করেছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।' জানা গিয়েছে, চড়া সুদ কারবারী চক্রের ৩০ জন তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের নজরে রয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, স্কুল শিক্ষক অনিমেষ সরকার কাটোয়া শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হরিসভা পাড়ার বাসিন্দা। চিকিৎসার জন্য তিনি ২০১৯ সালে পরিচিত বুড়ো প্রামাণিক নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা ঋণ করেছিলেন। চড়া সুদের চক্রে সেই ৫ লক্ষ টাকা এখন ১০ লক্ষ টাকায় দাঁড়িয়েছে। ওই টাকা শোধ করতে না পারার কারণে সুদ পরিশোধ করতে অনিমেশবাবুকে ফের অন্য ব্যক্তির কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিতে হয়। এইভাবে তিন বছরে চড়া সুদের কারবারিদের চক্রে ফেঁসে গিয়ে হুমকির মুখে পড়া অনিমেষবাবু পুলিশকে সব জানান। উপায় না দেখে অনুমেষের সাফ স্বীকারোক্তি ছিল, আত্মহত্যা করা ছাড়া তাঁর আর বাঁচার কোন পথ নেই।

এই অভিযোগ পেয়েই কাটোয়া থানার পুলিশ মামলা রুজু করে তদন্তে নামে। চড়া সুদের কারবারী চক্রের চারজনকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত চার চড়া সুদের কারবাররীদের জেরা করে পুলিশ বাকি চড়া সুদের কারবারীদের খৌঁজ পেতে চাইছে। পুলিশের অনুমান এটা একটা বড়সড় চক্র। এই চক্রের কারবারীরা অসহায় মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ানোর নামে টাকা ধার দিয়ে চড়া সুদের ফাঁদে ফেলে সুদ পরিষোধ করতে বাধ্য করে। এই সুদে কারবারীদের ফাঁদে পড়ে অনেকেই সর্বশান্ত হয়েছে।

চলতি বছরের অক্টোবর মাসের ২২ তারিখে কেতুগ্রামের সুদ কারবারীদের টাকা দিতে না পারায় এক সরকারি কর্মীকে তুলে নিয়ে গিয়ে রেললাইনে বেঁধে রাখার অভিযোগ ওঠে। তার পা কাটা যায়। এই সুদ কারবারীদের মাসল ম্যানদের ভয়ে অনেকে আত্মহত্যা করছেন এমন খবরও পুলিশ পেয়েছে। পুলিশ এও জানতে পেরেছে, এই চক্রের লোকজনের কাছে কেউ একবার টাকা ধার করলে তাঁর অবস্থা শোচনীয় হবেই। যত দিন যাবে আসল টাকার সঙ্গে চক্রবৃদ্ধিহারে সুদের পরিমাণ বাড়তে থাকবে। দু-তিন বছরের মধ্যে আসল-সুদ মিলিয়ে বিশাল অঙ্কেরর টাকা ঋণ গ্রহীতাকে শোধ করতে হবে। টাকা শোধ করতে না পারলে ভিটে-মাটি পর্যন্ত সুদে কারবারীরা লিখিয়ে নেয়।

শিক্ষক অনিমেষ সরকার বলেন, 'চড়া সুদের কারবারীরা আমাকে লাগাতার হুমকি দিচ্ছে। টাকা শোধ না করলে পরিবারকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে বলেও শাসিয়ে গিয়েছে। এমনকী আমার স্ত্রী ও বাচ্ছাকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়েছে।' এরপরই কাটোয়া থানার দ্বারস্থ হয়েছেন অনুমেষবাবু।

East Burdwan burdwan West Bengal
Advertisment