কাটা হাত নিয়েই ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাজে যোগ দিলেন নার্স রেণু খাতুন। নার্সের চাকরি করতে না দিতে চেয়ে তাঁর ডান হাত কেটে নিয়েছিল স্বামী-সহ ভাড়াটে দুস্কৃতীরা। তবুও সরকারি হাসপাতালের নার্স হওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে এক চুলও সরেননি পূর্ব বর্ধমানের কোজলসা গ্রামের বধূ রেণু। এই লড়াইয়ে রেণু পাশে পান স্বয়ং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়কে। প্রথমে রেণু জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের অফিসে কাজে যোগ দেন। তার পর বৃহস্পতিবার তিনি বর্ধমানে ১ নম্বর ব্লকের কুড়মুন ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাজে যোগদান করলেন।
ভালবেসে ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে কেতুগ্রামের চিনিসপুর গ্রামের যুবক সরিফুল শেখকে বিয়ে করেছিলেন কোজলসা গ্রামের মেয়ে রেণু খাতুন। রেণু নার্সিং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। একাধিক বেসরকারি সংস্থায় কাজ করার পর বিবাহিত রেণু সম্প্রতি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে নার্সপদে চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। সেই চাকরিতে তাঁর যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাঁকে সরকারি নার্সের চাকরি করতে দিতে চান না তাঁর স্বামী সরিফুল শেখ। সরিফুলের ধারণা ছিল, স্ত্রী রেণু সরকারি চাকরিতে গেলে হাতছাড়া হয়ে যাবেন।
আরও পড়ুন যোদ্ধা রেণুকে জড়িয়ে ধরলেন দিদি মমতা, বললেন- ‘পাশে আছি’
অভিযোগ, যাতে চাকরি করতে না পারে সেজন্য রেণুর ডানহাতের কব্জি থেকে কেটে নেওয়া হয় গত ৪ জুন রাতে। ওই ঘটনার পরের দিন ৫ জুন এনিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন রেণুর বাবা আজিজুল হক। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ দু'দিনের মধ্যেই সরিফুলকে গ্রেফতার করে। তারপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মুর্শিদাবাদের ভরতপুর থানার তালগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয় আসরফ আলি শেখ ও হাবিবুর রহমানকে। তারপর এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় অন্যতম মাস্টারমাইন্ড সরিফুলের মাসতুতো ভাই চাঁদ মহম্মদকেও। ধৃতদের সবার এখন ঠাঁই হয়েছে শ্রীঘরে ।
গত ২১ জুন কেতুগ্রামের নির্যাতিতা রেণু খাতুন জেলা মুখ্য স্বাস্থ দফতরে গিয়ে স্টাফ নার্স গ্রেড ২ পদে যোগ দেন। স্বাস্থ্য ভবন থেকে কোনও নির্দেশ না আশা পর্যন্ত আপাতত রেণু খাতুন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য দপ্তরে কর্মরত থাকছেন বলে সেদিন জানিয়েছিলেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায়।তারই মধ্যে এদিন রেণু ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কাজে যোগ দিলেন।