Advertisment

'জ্বালিয়ে খাওয়া' তৃণমূল নেতাই পুলিশ? ছবি দেখে হতভম্ব দলেরই নেতৃত্ব! কেসটা কী?

সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূল নেতার ছবি দেখেই জেলার রাজনৈতিক মহলেও জোর চর্চা শুরু।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
burdwan tmc leader is showed social media on wb police uniform

পুলিশের পোশাকে তৃণমূল নেতা। ছবি: প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়।

যে তৃণমূল নেতার 'দৌরাত্ম্য' ও 'সন্ত্রাস' নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকাবাসীর একাংশ তারই গায়ে পুলিশের উর্দি দেখে জোর চর্চা। সামাজিক মাধ্যমে এই ছবি ছড়িয়ে পড়তেই পূর্ব বর্ধমানের রাজনৈতিক মহলেও তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। 'কীর্তিমান' ওই তৃণমূল নেতার নাম ফিরোজ শেখ। ফিরোজ পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী। এই তৃণমূল নেতা ও বেরুগ্রাম অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি শেখ
সাহাবুদ্দিন ওরফে দানির কীর্তিকলাপ নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী-সহ একাধিক প্রশাসনিক দফতরে বিস্তর অভিযোগও জমা পড়েছে। অভিযোগকারীরা আবার শাসকদলেরই জনপ্রতিনিধি ও কর্মাধ্যক্ষ।

Advertisment

বেআইনি বালি ব্যবসা সহ একাধিক দুর্নীতিতে যুক্ত থাকায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা ফিরোজ শেখ পুলিশের পোশাকে কেন? তা নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে। বৃহস্পতিবারই বর্ধমানে প্রশাসনিক সভা মুখ্যমন্ত্রীর। সেই সভার কয়েক ঘণ্টা আগে পুলিশের পোশাকে তৃণমূল নেতার ছবি ভাইরাল হতেই তোলপাড় পড়ে গিয়েছে জেলার শাসক-বিরোধী উভয় শিবিরে। শাসকদলের নেতাদের একাংশ যেমন অভিযোগ তুলেছেন, অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী রাজনৈতিক নেতারাও। জামালপুরের চক্ষণজাদি গ্রামের তৃণমূল নেতা ফিরোজের গায়ে পুলিশের পোশাক কিভাবে উঠল? আবার ছবিও তোলা হল! পুলিশের পোশাক পরে ফিরোজের ছবি তোলার কারণটাই বা কি? গোটাটাই রহস্যে মোড়া। যার তদন্ত দাবি
করেছেন জামালপুরের মানুষজন ও বিরোধী দলের নেতারা।

publive-image
কখনও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছবিতে ফিরোজ, কখনও আবার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশেও বসে ছবি তুলতে দেখা গিয়েছে তাকে।

মুখ্যমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জামালপুরের বেরুগ্রাম-সহ একাধিক পঞ্চায়েত এলাকায় দামোদর নদ থেকে অবাধে বালি লুঠের অভিযোগ অনেক দিন আগে থেকেই উঠছে। শুধু বালি লুঠ নয়, ভারত রক্ষা আইনের আওতাভুক্ত থাকা দামোদরের বাঁধ বিপন্ন করে তার উপর দিয়ে ওভারলোডেড ট্রাক নিয়ে যাওয়ার জন্য ক্রসিং পয়েন্টও করা হয়েছে বলে অভিযোগ। জামালপুরের বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন মৌজা এলাকা-সহ চলবলপুর, হাবাসপুর, সারাংপুর, দাদপুর, শিয়ালী, কোড়া, মুইদিপুর প্রভৃতি বিভিন্ন এলাকায় ’গ্রিন ট্রাইবুনালের’ রায় অমান্য করে দিনে ও রাতে বালি লুঠ চলছে বলে শাসক দলের নেতারাই অভিযোগ করেছেন। ওই সব নেতাও জনপ্রতিনিধিদের দাবি, বেরুগ্ৰাম পঞ্চায়েত এলাকাজুড়ে শেখ সাহাবুদ্দিন ওরফে দানি ও শেখ ফিরোজ দাপিয়ে বালির অবৈধ কারবার চালাচ্ছে।

এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর-সহ রাজ্য প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে বিস্তর অভিযোগ জমা পড়েছে। পাঁচ পাতার অভিযোগপত্র পাঠিয়েছেন শসাকদলেরই জনপ্রতিনিধি ও কর্মাধ্যক্ষরা। সেই অভিযোগ পত্রের প্রতিটি অনুচ্ছেদে রয়েছে তৃণমূল নেতা দানি ও ফিরোজের সন্ত্রাস, লুঠপাট ও
তোলাবাজির গুচ্ছ-গুচ্ছ বিবরণ। তাতে দানি ও ফিরোজের বিরুদ্ধে বালি মাফিয়াদের সঙ্গে আঁতাত করে দামোদর থেকে বালি লুঠ করা থেকে শুরু করে গাছ কাটা, আবাস যোজনার উপভোক্তাদের থেকে কাটমানি নেওয়া, স্কুলের জমি আত্মসাতের মত বিস্ফোরক অভিযোগও রয়েছে।

আরও পড়ুন- বিশ্বভারতীর ‘অপমানের’ ‘বদলা’ নেবেন মমতা, নজিরবিহীন পদক্ষেপের পথে মুখ্যমন্ত্রী

তৃণমূলের জামালপুর ব্লক কমিটির নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ প্রদীপ পাল এদিন বলেন, “ফিরোজ শেখ ও শেখ সাহাবুদ্দিন ওরফে দানির বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর-সহ প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ পাঠিয়েছি। পুলিশের পোশাক পরে ফিরোজের ছবি আমরা ফিরোজের ফেসবুক প্রোফাইলেই দেখতে পাই। তাহলে কি রাতের অন্ধকারে ওভারলোডেড বালি বোঝাই ট্রাক ও লরি থেকে 'তোলা' আদায় করতেই
ফিরোজ পুলিশের পোশাক পরে রাস্তায় নামত! পুলিশের পোশাক পরে ফিরোজের এই ছবির আসল রহস্যটি কি সেটা জানতে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর-সহ প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে অভিযোগ জানিয়েছি।’

অন্যদিকে, জামালপুর ব্লকের বিজেপি যুব মোর্চার নেতা অজয় ডকাল বলেন, “আসলে তোলা আদায়ের সুবিধার জন্যই তৃণমূল নেতা ফিরোজ শেখ পুলিশের পোশাক পড়ে সামাজিক মাধ্যমে নিজেকে জাহির করছেন। আমরা চাই পুলিশ প্রশাসন শেখ ফিরোজের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।'

tmc West Bengal Police East Burdwan
Advertisment