সোমবার থেকে টানা তিন দিন শুধু অফিস ও স্কুল টাইমে বাস চালানোর সিদ্ধান্তে অবিচল রয়েছে বাস মালিকদের সংগঠন। কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা ও হাওড়ায় "গো স্লো ট্রিপ" আন্দোলনে অংশ নিতে চলেছে বাস মালিকদের একটা বড় অংশ। জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটের সাধারন সম্পাদক তপন বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেন, "আট হাজার বাস ওই তিন দিন দুই ট্রিপ করে চলবে। পরিবহণ দপ্তরকে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।" যদিও পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বাস মালিকদের এই আন্দোলনের ডাক ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন। কোনমতেই এখন আর বাসভাড়া বাড়ানো হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
বেসরকারি বাস মালিকদের সারা দিনে দুদফায় বাস চালানোর সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়বেন বলেই অনেকে মনে করছেন। অফিস বা স্কুল টাইমের বাইরে অন্য় সময়ে সাধারণ যাত্রীরা কি ভাবে গন্তব্য়ে পৌঁছবেন, তা নিয়ে রীতিমত প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। মজার বিষয়, সাধারণের যাই হাল হোক না কেন, তা নিয়ে ঠেলাঠেলি চলছে বাস মালিক ও পরিবহণ দপ্তরের মধ্য়ে। যদিও বাস মালিকদের সবকটি সংগঠন এই আন্দোলনে সামিল হচ্ছে না। তবে ৮,০০০ বাস যদি মাত্র দুটি ট্রিপ চালায়, তাহলে কলকাতা ও আশপাশের তিন জেলায় যাত্রী পরিবহণে সমস্য়া দেখা দিতে পারে।
আরও পড়ুন: তিনদিন অফিস টাইমে বাস, তরপর বস্ত্রহীন মিছিল বাস মালিকদের
হঠাৎ করে “গো স্লো" কীভাবে মাথায় এল? বাস সংগঠনে অভিজ্ঞ তপনবাবুর কথায়, "১৯৭০-এর দশকে ছাত্র আন্দোলন করেছি। দীর্ঘদিন বাস সংগঠন করেছি। বনধ বা ধর্মঘট করলেই সরকার রক্তচক্ষু দেখায়। তাই একটু ভিন্ন ধারার আন্দোলনের কথা ভেবেছি। বাস সংগঠনের অভিজ্ঞতা থেকেই এই আন্দোলন বেছে নিয়েছি। আর দেশ-বিদেশে বস্ত্রহীন আন্দোলন তো চলছেই।কলকাতায় ১ নভেম্বর ১,০০০ বাসমালিক বস্ত্রহীন হয়ে প্রতিবাদ মিছিল করবেন।" একদিকে ডিজেলের ক্রমাগত মূল্য়বৃ্দ্ধির প্রতিবাদ, অন্য় দিকে বাস ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে এই আন্দোলনের পথ বেছে নিয়েছেন বাস মালিকরা।
বাস মালিকদের দু দফার এই আন্দোলনকে কোনো গুরুত্বই দিচ্ছেন না পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। বরং তাঁর বক্তব্য়, "বাস মালিকরা যাই বলুন, ভাড়া বাড়ানোর কোনও প্রশ্ন নেই।" টানা তিনদিন দু ট্রিপ বাস চালানো নিয়ে মানুষ কি বিভ্রান্ত হচ্ছেন না? পরিবহণ মন্ত্রীর জবাব, "মানুষ বিভ্রান্ত হবেন কেন? মানুষের বিভ্রান্ত হওয়ার তো কিছু নেই। সরকার যথেষ্ট দায়িত্বশীল। পরিবহণ ব্য়বস্থা ঠিক রাখার দায়িত্ব সরকারের। কয়েকদিন আগে বিজেপির ডাকা বনধেও তো আমরা পরিষেবা দিয়েছি। সেদিন আমাদের ৪৫টা গাড়ি ভেঙেছে। পাঁচটা গাড়িতে আগুন ধরিয়েছে। কোন মালিক কি বললেন না বললেন তা নিয়ে ভাবছি না। আর ভাড়া বাড়ানোর কোনও প্রশ্ন নেই। দু'মাস আগেই ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।"