কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিকের এক ধমকানিতে জামা পরে নিলেন মিছিলকারিরা। বস্ত্রহীন মিছিলের ডাক দিয়েও সফল হলেন না বাস মালিকরা। লেনিন সরণি থেকে মিছিল এসএন ব্যানার্জি হয়ে শেষ হল ডোরিনা ক্রসিং-এ। মিছিল শেষ হতেই ফের জামা খোলা শুরু করলেন আন্দোলনকারিরা। কোনওরকমে মুখ রাখলেন আন্দোলনের। তখন তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি ও বাস ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে বৃহস্পতিবার মহানগরে বস্ত্রহীন মিছিলের ডাক দিয়েছিল জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটস।
সোমবার থেকে টানা তিনদিনের 'গো স্লো ট্রিপ' আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল জয়েন্ট কাউন্সিল। ওই তিনদিন শুধু অফিস টাইমে দু ট্রিপে বাস চলবে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। দুপুরের দিকে রাস্তায় বাস চলবে না। জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটসের সাধারন সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, তাঁদের আন্দোলনে ৮,০০০ বাস সামিল হবে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যায়, দুপুরের দিকে বাস চলেছে যথেষ্ট সংখ্যক। এক কথায়, তিনদিনের 'গো স্লো ট্রিপ' ফ্লপ শোতে পরিনত হয়।
তপনবাবুর বক্তব্য, "আমরা বার্তা দিতে চেয়েছিলাম সরকারকে। সে বিষয়ে আমরা সফল।" তবে অনেক বাসই আন্দোলনে সামিল হয়নি তা স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বাস মালিকদের এই আন্দোলনকে পাত্তাই দেননি। মন্ত্রীর বক্তব্য, "তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের কটা বাস রয়েছে? তাঁর স্ত্রীর নামে মাত্র একটি বাস আছে। তাছাড়া, এখন সরকার আর বাস ভাড়া বাড়াবে না।"
তিনদিনের আন্দোলনের পর এদিন বস্ত্রহীন মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন আন্দোলনকারি বাস মালিকরা। সেই অনুযায়ী লেনিন সরণি থেকে মিছিল শুরুর প্রস্তুতি শুরু হয়। ব্যাপক সংখ্যায় পুলিশকর্মীও হাজির হয়ে যান। পুলিশ আন্দোলনকারিদের স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, কলকাতার রাস্তায় জামা খুলে মিছিল করা যাবে না। তাহলে মিছিলের শুরুতেই গ্রেপ্তার করা হবে। তৎক্ষনাৎ মিছিলকারিরা জামা পরে নেন। এসএন ব্যানার্জি রোড হয়ে মিছিল পৌঁছয় ডোরিনা ক্রসিং-এ। সেখানে পৌঁছে ফের জামা খুলতে শুরু করেন আন্দোলনকারি বাস মালিকরা। এবার পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ ভ্যানে তুলে নেয়।
জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটসের এই আন্দোলনকে নৈতিকভাবে বেশ কিছু পরিবহণ সংগঠন সমর্থন করেছে। তবে তাদের আন্দোলনে সামিল হয়নি মিনিবাস সংগঠনসহ অন্যরা। বাস মালিকদের বক্তব্য, যে ভাবে ডিজেলের দাম বাড়ছে, তাতে রাস্তায় নামা ছাড়া গতি নেই। এমনকী কলকাতার ক্ষেত্রে প্রতি পর্যায়ে এক টাকা ভাড়া বৃদ্ধিও তাঁরা মেনে নিতে পারছেন না। ফের বৃহত্তর আন্দোলন করবেন বলে বাস সংগঠন জানিয়ে দিয়েছে।