অনুব্রত মণ্ডলের জামিন মামলায় লালন শেখে মৃত্যু নিয়ে মন্তব্য করলেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি। গত সোমবার সিবিআই হেফাজতে থাকাকালীন বগটুই হত্যা মামলার মূল অভিযুক্ত লালন শেখের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। লালন আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের। তবে, পুলিশ ইতিমধ্যেই সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ রুজু করেছে। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিবিআই। এই ইস্যুতে রাজ্যরাজনীতিতেও বিস্তর টানাপোড়েন। এরই মধ্যে শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে অনুব্রত মণ্ডলের জামিন মামলায় উঠে আসে লালনের মৃত্যু তদন্ত। সিবিআইয়ের আইনজীবীর দাবি, গরু পাচার কাণ্ডের তদন্তকারী আইও-কে লালন মৃত্যু মামলায় যুক্ত করা হয়েছে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে। তখন বিচারপতি বাগচি বলেছেন, 'লালন শেখের সিবিআই হেফাজতে মৃত্যু নিয়ে পুলিশ এফআইআর করে ভুল করেনি।' এই মৃত্যুর দায় সিবিআই এড়াতে পারে না বলেও মত তাঁর।
বিচারপতি জলমাল্য বাগচি এ দিন সিবিআইকে ভর্থসনা করে বলেছেন, 'আপনারা বলছেন আত্মহত্যা, কিন্তু সিবিআই হেফাজতে মৃত্যু কখনই সাধারণ মৃত্যু নয়। বিচারাধিন বন্দিকে নজরে রাখা কী দায়িত্ব নয়? আত্মহত্যা হলেও সেই দায় তদন্তকারী সংস্থার থেকেই যায়। লালন শেখের মৃত্যু নিয়ে পুলিশ এফআইআর করে কোনও ভুল করেনি। সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন মেনে পুলিশ উপযুক্ত কাজ করেছে।'
লালন শেখকে খুন করা হয়েছে বলে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন স্ত্রী রেশমা বিবি। অভিযোগপত্রে তিন সিবিআই অফিসারের নাম ছিল। যার উপর ভিত্তি করে পুলিশ সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশের খাতায় উঠে এসেছে গরু পাচারকাণ্ডে সিবিআইয়ের আইও সহ মোট সাত জন অভিসারের। যাকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি করছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। পুলিশি এফআইআরের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন জানিয়েছে সিবিআই।
গত পরশু সেই মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল, লালন মৃত্যুর কিনারায় সিআইডি তদন্ত চলবে। তবে যে সাত আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে এখনই কোনও কড়া পদক্ষেপ পুলিশ করতে পারবে না।
এদিকে বগটুই গ্রামে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। সিসিটিভিগুলিকে ফের সচল করা হয়েছে। অন্যদিকে এদিনই বগটুইতে গিয়েছেন সিআইডি গোয়েন্দারা। লালনের স্ত্রীর রেশমা বিবির বয়ান রেকর্ড করবেন বলে সূত্রে খবর। আগেই এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত জাহাঙ্গির শেখের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে।