Youth Commits Suicide Due To Fear Of CAA-NRC- দেশজুড়ে কার্যকর হয়েছে সিএএ। নয়া আইনের নিয়ম ঘিরে ইতিমধ্যেই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মোদী সরকারকে আক্রমণ করছে বিরোধী দলগুলো। এসবের মধ্যেই সিএএ-এনআরসি আতঙ্কে কলকাতার নেতাজিনগরের বাসিন্দা এক যুবক আত্মঘাতী হয়েছেন। এমনই অভিযোগ বাংলার শাসক দল তৃণমূলের।
বৃহস্পতিবার তৃণণূলের তরফে দলের অফিশিয়াল সোশাল মিডিয়া পোস্টে লেখা হয়েছে, 'মোদী সরকারের বিপর্যয়কর সিদ্ধান্তের বিপর্যয়কর প্রভাব! নেতাজিনগরের বাসিন্দা ৩১ বছর বয়সী দেবাশিস সেনগুপ্ত আত্মহত্যা করেছিলেন এবং তাঁকে সোনারপুর গ্রামীণ হাসপাতালে মৃত নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর পরিবারের সদস্যরা স্পষ্ট করেছেন যে সিএএ এবং এনআরসি-র দরুন নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করা নিয়ে দেবাশিস ঘন ঘন আতঙ্কে ভুগছিলেন।'
ওই পোস্টেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করেছে তৃণমূল। লেখা হয়েছে, 'রক্তের জন্য বাইরে বেরিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং তিনিকিছুতেই থামবেন না। মোদীজি পুরোটাই আপনার বিবেকের উপর!'
তৃণমূলের তরফে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। সেখানে মৃতের পরিচিত এক মহিলাকে তৃণণূল কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তীকে বলতে শোনা যাচ্ছে যে, 'আমার দাদা একা থাকতেন। মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বাড়িতেই ছিল। ফাঁকা বাড়ি। সুইসাইড করেছে। এনআরসি হলে বাংলাদেশে যদি তাড়িয়ে দেয়। সেই ভয়ে থাকত। চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে জন্ম। প্যানিক অ্যাটাক। ইউটিউবের খবর না দেখার জন্য বলতাম। সব ফেক। কিন্তু শুনত না।'
তৃণমূল কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তীর কাছে গিয়েছিলেন পরিবারের লোকজন।
মৃত ওই যুবক দেবাশিসের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল। ওই যুবকের কীভাবে মৃত্যু হল, কেন মারা গেলেন এসব খতিয়ে দেখতে দেবাশিস সেনগুপ্তের বাড়ি যাচ্ছে শাসক দলের প্রতিনিধি দল।
রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেছেন, 'আমরা বারবার বলছিলাম সিএএ-এনআরসি এই দুই আইনই শুধু বেআইনিভাবে প্রবর্তন করা হচ্ছে তাই নয়, এটা অগনতান্ত্রিক এবং জনমানসে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে, আতঙ্ক ছড়াবে। আমাদের চিন্তা যে অমূলক নয়, তা প্রমাণ হয়ে গেল। আজ এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল কলকাতা। কলকাতার নেতাজি নগর, ৩১ বছর বয়স্ক, সে আত্মহত্যা করেছে। তাঁকে যখন সোনারপুর গ্রামীন হাসপাতালে দেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে তখন তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁর পরিবার স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, দেবাশিস নাগরিকত্ব হারানোর ভয় পাচ্ছিল সিএএ-এনআরসি-র জন্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি কি দেখছেন এগুলো? আপনি কি থামবেন না? রক্তের পিপাসার শেষ হবে না কখনও? একবার বিবেকের মুখে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করুন।'
এই মর্মান্তিক ঘটনা প্রসঙ্গে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, 'এটা তৃণমূলের রাজনীতি ছাড়া কিছু নয়। মৃত্যু দুঃখজনক। তবে আসল কারণ না জেনে মন্তব্য কবর না। তৃণমূল এই ভোটে বিপুল ভোট হারবে তাই খরকুটো ধরে বাঁচতে চাইছে।'
প্রথম থেকে সিএএ-এনআরসি-র বিরুদ্ধে সোচ্চার তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাবড়ার সভা থেকে তিনি বলেছিলেন যে, 'এটা বৈধ কি না, তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। কোনও স্বচ্ছতা নেই। টোটাল ভাঁওতা।একটা কথা মন দিয়ে শুনে নিন! আপনারা কেউ নাগরিকত্বের জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন করবেন না। করলেই আপনাদের নাগরিকত্ব চলে যাবে। আপনাকে বেআইনি অনুপ্রবেশকারী বলবে। আপনার সম্পত্তি কেড়ে নেবে। ওই ফাঁদে খবরদার পা দেবেন না।'
বিজেপির বিরুদ্ধে বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ তোলেন মমতা। বলেন, 'ভোটের আগে বিজেপি বিভাজনের খেলা খেলতেই এটা করেছে। তা হলে চার বছর বসে রইল কেন? ওরা আবার বাংলাটাকে ভাগ করতে চায়। বাঙালিকে তাড়াতে চায়। ২০১৯ সালে অসমে এনআরসির নামে ১৯ লক্ষ মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ১৩ লক্ষ বাঙালি হিন্দু।'