'তিনি শরনার্থী এবং অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে ফারাকটাই বোঝেন না…' ! সিএএ নিয়ে মমতাকে তোপ অমিত শাহের।
দেশ জুড়ে কার্যকর হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ CAA নিয়ে সংবাদ সংস্থা ANI-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সিএএ নিয়ে সকল প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। অমিত শাহ সিএএ নিয়ে বিরোধীতার জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন। তিনি বলেন, 'তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো শরনার্থী এবং অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না'।
অমিত শাহ আরও বলেন, 'আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করতে চাই। রাজনীতির অনেক প্লাটফর্ম আছে। দয়া করে বাংলাদেশ থেকে আসা বাঙালি হিন্দুদের বিরোধিতা করবেন না। আপনি নিজেও বাঙালি। আমি তাকে একটি ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে চাই। তিনি আমাদের জানান এই আইনের কোন ধারায় নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার বিধান রয়েছে'?
'মমতা রাজনীতি করছেন…'
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সাক্ষাত্কারে আরও বলেছিলেন যে 'তিনি শুধুমাত্র সিএএ নিয়ে সাধারণের মধ্যে ভয় তৈরি করছেন তাই নয় ভোটব্যাঙ্ককে শক্তিশালী করতে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করছেন। জাতীয় নিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে তিনি রাজনীতি করছেন। শাহ বলেন, 'জনগণ আপনাদের পাশে দাঁড়াবে না'। উদ্বাস্তু আর অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী এর আগে বলেছিলেন, তিনি তার রাজ্যে সিএএ প্রয়োগ হতে দেবেন না, নির্বাচনের আগে সিএএ কার্যকর নিয়ে মোদী সরকারকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন এটা আসলে বিজেপির একটা কৌশল। মমতা বলেন, ‘সিএএ, এনআরসি আমরা মানব না। যেই আবেদন করবেন, ভোট তো দিতে পারবেনই না। যতই বলুক অধিকার কাড়া হবে না, সেটা লেখা নেই।’’ মমতা আরও বলেন, ‘‘যত দিন আমি থাকব, মা-মাটি-মানুষ থাকবে, আপনাকে যদি মনে করে দেশ থেকে বিদায় করবে, কারও ক্ষমতা নেই। গায়ে রক্ত থাকতে তা করতে দেব না।’’
উল্লেখ্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক স্পষ্ট করে জানিয়েছেন CAA এর উদ্দেশ্য হল নির্যাতিত অমুসলিম উদ্বাস্তুদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা। এর মধ্যে রয়েছে হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি ও খ্রিস্টান। যারা বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪-এর আগে ভারতে এসেছিলেন। অমিত শাহ এদিন জোরের সঙ্গে জানিয়েছেন, নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন কোন পরিস্থিতিতেই বাতিল করা হবে না।
আইনটি বাস্তবায়নের বিষয়েও কথা বলতে গিয়ে অমিত শাহ বলেছিলেন, "সংখ্যালঘু বা অন্য কোনও সম্প্রদায়ের মানুষের এই আইন নিয়ে ভয় পাওয়ার দরকার নেই কারণ CAA-তে কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার কোনও বিধান নেই।"
আরও পড়ুন : < Arjun Singh-BJP: অর্জুনের BJP-তে ঘরওয়াপসির পরতে-পরতে চূড়ান্ত নাটক! আজই দুরন্ত ‘পালাবদল’ বাংলায়? >
তিনি বলেন, 'CAA শুধুমাত্র আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ, খ্রিস্টান এবং পার্সি উদ্বাস্তুদের অধিকার এবং নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন,"। সিএএ-র মাধ্যমে বিজেপি একটি নতুন ভোটব্যাঙ্ক তৈরি করছে বিজেপি, বিরোধীদের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "বিরোধীদের আর কোনো কাজ নেই, দেশের উন্নয়ন, মোদী সরকারের নিন্দা করাটাই তাদের উদ্দেশ্য"।
এ প্রসঙ্গে তিনি ৩৭০ ধারা বাতিলের প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, বিরোধীরা বলে আসছিল ৩৭০ ধারা বাতিল ছিল আমাদের রাজনৈতিক সুবিধার জন্য। এছাড়াও বিরোধী দলগুলির CAA বিজ্ঞপ্তির সময় নিয়ে প্রশ্ন তোলার জবাবে শাহ বলেন, "আসাদুদ্দিন ওয়াইসি, রাহুল গান্ধী, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ সমস্ত বিরোধী দল মিথ্যার রাজনীতি করছে।"
"তিনি বলেন, সিএএ কার্যকরের সঙ্গে সময়ের কোন প্রশ্নই আসে না। ২০১৯ সালে বিজেপি তার নির্বাচনী ইস্তেহারে বলেছিল দেশজুড়ে CAA চালু করা হবে"। তিনি বলেন, '২০১৯ সালে, সিএএ সংসদে পাস হয়েছিল কিন্তু কোভিডের কারণে তা বিলম্বিত হয়। বিরোধীরা তুষ্টির রাজনীতি করতে চায় এবং তাদের ভোটব্যাংক সুসংহত করতে চায়। দেশের মানুষ জানে যে সিএএ এই দেশের আইন। আমি গত চার বছরে ৪১ বার বলেছি নির্বাচনের আগে তা বাস্তবায়ন করা হবে"।