গত ৬ বছরের বেশি রাজ্যের সব কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ রয়েছে। সরব হয়েছে তৃণমূল বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলো। কিন্তু তেমনভাবে কর্ণপাত করেনি নবান্ন। এরপর গত ২৮ অগাস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস ছিল, পুজোর পর ছাত্র ভোট করানো হবে। এসবের মধ্যেই মঙ্গলবার ছাত্র সংসদের ভোট নিয়ে বড় নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। রাজ্য সরকারকে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চের নির্দেশ, যেসব কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রভোট হয়নি, সেখানে সব দিক খতিয়ে দেখে অবিলম্বে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
পাশাপাশি রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে সময়মতো নির্বাচন করানোর জন্য কোনও নির্দেশিকা কি রাজ্যের তরফে জারি করা হয়েছে? হলফনামা দিয়ে তা রাজ্যকে জানাতে বলেছে আদালত। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে র্যাগিং-বিরোধী কমিটি বা র্যাগিং-বিরোধী স্কোয়াড গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কি না, তা-ও জানাতে হবে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে র্যাগিং সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করেছিলেন আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে র্যাগিং, জুনিয়র ছাত্রছাত্রীদের উপর অত্যাচার ঠেকাতে প্রাক্তন সিবিআই ডিরেক্টর আর কে রাঘবনের নামে যে কমিটি গঠন করা হয়েছিল, ইউজিসি-র অনুমোদিত পশ্চিমবঙ্গের কোনও বিশ্ববিদ্যালয়েই সেই নির্দেশিকা সঠিক ভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না।
এই সূত্রেই ওই মামলায় ছাত্র সংসদকে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু মামলাকারীর বক্তব্য ছিল, ২০১৭ সাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচন বন্ধ। ফলে র্যাগিং-বিরোধী নিয়মাবলিও ছাত্রদের মধ্যে প্রয়োগের ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি রয়েছে। ক্যাম্পাসে কোনও রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ নেই। ছাত্রদের অভিযোগ জানানোর জায়গাও নেই। এর পরেই বিচারপতি জানতে চান, ছাত্রভোট কে করায়? মামলাকারী জানান, রাজ্য সরকার নির্দেশ দিলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করেন এবং পরিচালনা করেন।
আদালতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, আর কে রাঘবন কমিটির নিয়মগুলি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রযুক্ত হওয়া দরকার। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিরই উচিত, রাজ্য সরকারের কাছে ভোট আয়োজনের অনুমতি চাওয়া। এরপরই ছাত্র ভোট নিয়ে বড় নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।