ভোট পরবর্তী হিংসার জেরে ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতে গত ৩১ মে কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের। তিন সদস্যের কমিটিতে ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও রাজ্যের লিগ্যাল সার্ভিসের আধিকারিক। কিন্তু সেই কমিটির কাজে সন্তুষ্ট নয় আদালত। শুক্রবারের শুনানিত ফের নতুন করে কমিটি তৈরির নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের উচ্চতর বেঞ্চ। নয়া কমিটি গঠন করবেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান।
ভোট পরবর্তী হিংসার জেরে ঘরছাড়া ব্যক্তিদের যাবতীয় অভিযোগ খতিয়ে দেখবেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রধান। রাজ্য সরকার ও এ সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো কেবলমাত্র লজিস্টিক সাপোর্ট দেবে। শুনানিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল সাফ জানিয়েছেন যে, বাংলায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষারদায়িত্ব রাজ্য সরকারেরই।
কলতাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির উচ্চতর বেঞ্চ এদিন জানায়, রাজ্য। সরকার ভোট পরবর্তী হিংসার কথা অস্বীকার করলেও আদালতে জমা পড়া অভিযোগের ভিত্তিতে বলা যায় হিংসার প্রমাণ রয়েছে। এর আগে ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতে যে কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তাতে রাজ্য ও কেন্দ্রের মানবাধিকার কমিশন এবং রাজ্য লিগ্যাল সার্ভিস রয়েছে। কেন্দ্রের মানবাধিকার কমিশন প্রয়োজনীয় সাহায্য পায়নি। অসহযোগিতা করা হয়েছে। তাই এবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে নতুন করে কমিটি গঠনের অধিকার দেওয়া হচ্ছে।
ঘরছাড়াদের অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রের মানবাধিকার কমিশন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবে। কমিটিকে সাহায্য করবে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। কিন্ত এ ক্ষেত্রে সহযোগিতার ঘাটতি থাকলে সেই দায় রাজ্যের ঘাড়েই বর্তাবে। কেন্দ্রের মানবাধিকার কমিশন আদালতে রিপোর্ট জমা দেবে।
রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার বিষয় খতিয়ে দেখতে কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক জনস্বার্থ মামলা হয়। গুরুত্বের বিচারে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টে তৈরি হয় পাঁচ বিচারপতির বৃত্তর বেঞ্চ। গড়া হয় কমিটি। নির্দেশ ছিল, যে সমস্ত ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে ঘরে ফিরতে পারছেন না তাঁদের অবিলম্বে রাজ্য আইনি পরিষেবা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের লিগ্যাল এইড সার্ভিসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। কমিটি পরে এদের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্থানীয় পুলিশ অফিসারের দিয়ে ঘর ছাড়াদের ঘরে ফেরার ব্যবস্থা করবে। কিন্তু, বাস্তবে তা না হওয়ায় এদিন অসন্তো। চেপে রাখেননি বিচারপতিরা। রাজ্যের তরফে ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরানো ও ভোট পরবর্তী হিংসায় মদতদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার কথা বলা হলেও তা স্পষ্ট নয় বলে আদালতের পর্যবেক্ষণ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন