বগটুইকাণ্ডের অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত লালনকে ঝাড়খণ্ডের পাকুড় থেকে গ্রেফতার করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। গত ৪ ডিসেম্বর লালনকে রামপুরহাট আদালতে হাজির করানো হলে তাঁকে ৬ দিনের সিবিআইয়ের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। সিবিআই হেফাজতেই তাঁর ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যু হয়। সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে লালনকে খুনের অভিযোগ তোলেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগ, হেফাজতে থাকাকালীন লালনকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। এরপরই লালনের স্ত্রী রেশমা বিবি সিবিআইয়ের তিন জন আধিকারিকের নাম ও ফোন নম্বর উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ করেন। যার ভিত্তিতে মোট সাত জন সিবিআই আধিকারিককে অভিযুক্ত করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে লালনকে খুনের অভিযোগ রুজু করে পুলিশ। সাত সিবিআই গোয়েন্দাদের মধ্যে রয়েছেন গরু ও কয়লা পাচারকাণ্ডের তদন্তকারী আধিকারিকও।
বর্তমানে হাইকোর্টের নির্দেশে সিআইডি লালন মৃত্যুর তদন্ত করছে। আদালত বয়ান রেকর্ডের সময় সিআইডিকে ভিডিওগ্রাফির নির্দেশ দিয়েছিল। তবে হাইকোর্টের নির্দেশে সিআইডি অভিযুক্ত সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ করতে পারবে না।
এ দিনের শুনানিতে হাইকোর্টের প্রশ্ন, লালনের স্ত্রী তাঁর স্বামীকে হত্যা ও সিবিআই অফিসারদের বিরুদ্ধে ৫০ লাখ টানা দাবির অভিযোগ করলেও তাঁর বয়ানই এখনও রেকর্ড করা হয়নি কেন? রেশমা বিবি মানসিক ভাবে বিপর্যস্তবলে দাবি করলেও কীভাবে প্রতি দিন আদালতে আসছেন? কে তাঁকে অভিযোগপত্র লিখে দিল তা জানা প্রয়োজন। লালনের স্ত্রী রেশমা কীভাবে সিবিআই অফিসারদের ফোন নম্বর পেলেন? তাঁর কললিস্ট খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এই বিষয়ের কিনারায় তদন্ত হওয়া উচিত বলেও জানান বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। বিচারপতি স্পষ্ট বলেছেন যে, তদন্ত যে ভাবে চলছে, তা আরও ভাল ভাবে হওয়া উচিত।
সিবিআইয়ের আইনজীবীর আগেই দাবি করেছিলেন যে, তদন্তের নামে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের অযথা হয়রানি করা হচ্ছে। সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে সিআইডি এবং রাজ্য পুলিশের এফআইআর করার পিছনে নির্দিষ্ট কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে।