কলকাতা হাইকোর্টে বড় দাক্কা খেল রাজ্য সরকার। রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা ম্যাকাউটের উপাচার্য পদে সৈকত মৈত্রকে বহাল রাখার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। আগামী ৩ সপ্তাহের মধ্যে কাজে যোগ দিতে হবে বলে নির্দেশে উল্লেখ রয়েছে। সৈকতবাবুর অপসারণের পর বর্তমানে রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্যের পদে রয়েছে মলয়েন্দু সাহা। কাজে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে মলয়েন্দু সাহার থেকে সৈকতবাবুকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ বুঝে নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই বলে নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের।
২০১৭ সালে সৈকত মৈত্র প্রথম দফায় ম্যাকাউটের উপাচার্য হন। ২০২১-এর ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় দফায় ম্যাকাউটের উপাচার্য পদে তাঁর মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। ২০২৫ সাল পর্যন্ত উপাচার্যের নিয়োগ পান সৈকতবাবু। কিন্তু মেয়াদ শেষের আগেই রাজ্য সরকার প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে সৈকত মৈত্রকে সরিয়ে দেয়। অভিযোগ, উপাচার্যকে অপসারণে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মানা হয়নি। নির্দিষ্ট কারণও জানানো হয়নি। রাজ্য কেবল জানিয়েছিল যে 'শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি'র জন্য এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
২৯ জুলাই সৈকত মৈত্রকে উপাচার্য পদ থেকে অপসারণ করা হয়। এরপরই রাজ্যের ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেন অপসারিত উপাচার্য। গত সোমবার উপাচার্যকে অপসারণের সরকারি সিদ্ধান্তের উপরে সাত দিনের স্থগিতাদেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার ফের ছিল ওই মামলার শুনানি। এ দিন আদালতের নির্দেশ, রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা ম্যাকাউটের উপাচার্য পদে সৈকত মৈত্রকেই বহাল রাখতে হবে। আগামী ৩ সপ্তাহের মধ্যে কাজে যোগ দেবেন তিনি।
সৈকত মৈত্রের হয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, সৌম্য মজুমদার ও উত্তমকুমার মণ্ডল। আইনজীবী উত্তম মণ্ডল জানিয়েছিলেন, কেন মেয়াদ শেষের আগে উপাচার্য পদ থেকে তাঁকে সরানো হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আদালত। রাজ্যের তরফে কোনও যুক্তি দেখাতে পারেনি। ফলে ফের ওই পদে সৈকত মৈত্রকে বহালের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উপাচার্য সৈকত মৈত্রর উপর কেন মোহভঙ্গ হল রাজ্যের? জানা গিয়েছে, প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালেয়র হরিণঘাটা ক্যাম্পাসে এক আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। এরপরই অভিযুক্ত ওই কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সল্টলেক ক্যাম্পাসে বদলি করেন। মূলত এই কারণেই নাকি বিরোধ।