বকেয়া মহার্ঘভাতার দাবিতে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ধরনা আন্দোলন ৭০দিনে পড়ল। সামিল হয়েছেন আদালতের কর্মীরাও। দাবিপূরণে আন্দোলন বাংলার সীমানা ছাড়িয়ে দিল্লি নিয়ে যেতে উদ্যোগী আন্দোলনকারীরা। ১০ ও ১১ এপ্রিল দিল্লির যন্তর-মন্তরে অবস্থান-ধর্নার হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। তার পর নিজেদের দাবির কথা জানিয়ে দেশের রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের স্মারকলিপিও দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পূর্ব ঘোষণা মত আজ (৬ এপ্রিল) একদিনের কর্মবিরতি পালন করছেন সরকারি কর্মীরা। এই অবস্থায় ডিএ আন্দোলন নিয়ে বড় নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধানবিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম।
আদালতের কর্মীরা কর্মবিরতিতে যাওয়ায় চরম সমস্যায় বিচারপ্রার্থীরা। যা নিয়ে এদিন হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানমের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। যার প্রেক্ষিতে বিচারপতি জানান, দিনের পর দিন এভাবে কর্মবিরতি চলতে পারে না। রাজ্যের মুখ্যসচিব ও অর্থ সচিবকে কর্মী সংগঠনের ভিতর থেকে তিনজন প্রতিনিধি বেছে নিয়ে আলোচনায় বসতে হবে। রাজ্যের সঙ্গে কর্মচারীদের কী আলোচনা হল তা আগামী ১৭ এপ্রিল জানাতে হবে।
নির্দেশে জানানো হয়েছে যে, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে আলোচনার জন্য ৩ জনের নাম চূড়ান্ত করতে হবে। সরকারের তরফে মুখ্যসচিব, অর্থসচিব সহ দায়িত্বশীল পদে থাকা ব্যক্তিরা ডিএ আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন। হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম এদিন জানিয়েছেন যে, কর্মচারীরা পেনডাইন করলে সরকারের পদক্ষেপ প্রয়োজন। কারণ এতে মানুষের হেনস্থা হয়। একদিনে ক্ষতি হয় ৪৩৬ কোটি টাকা।
বর্তমানে বকেয়া ডিএ-এর বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। এই অবস্থায় হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন ছিল, শীর্ষ আদালতে মামলা বিচারাধীন হওয়া সত্ত্বেও কেন পেনডাউন কর্মসূচি? জবাবে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আইনজীবী জানান, শহিদ মিনারের ধরনা মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী ডিএ আন্দোলনারীদের 'চোর-ডাকাত' বলেছেন। যা অত্যন্ত অবমাননাকর। তার প্রতিবাদেই এদিন পেনডাউনের ডাক দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তামেন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের ডিএ-এর হার ৪২ শতাংশ। এবারের রাজ্য বাজেটে অর্থপ্রতিমন্ত্রীর ঘোষণা ছিল যে, মার্চ থেকে ডিএ বেড়ে ৬ শতাংশ হবে। পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের দাবি ছিল ডিএ বাড়িয়ে কেন্দ্রীয় হারে ৩৮ শতাংশ করবে হবে। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়েছেন যে, সরকারি কোষাগারের হাল বিবেচনা করে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দান অসম্ভব।