আমফানের ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিয়ার জেনারেলকে (ক্যাগ) তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ ছিল আমফানের ত্রান নিয়ে চরম দুর্নীতি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এক হাজার কোটি টাকা ত্রান-দুর্নীতির অভিযোগ করেছিল বজেপি। একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই এদিন হাইকোর্ট এই বিষয়ে খতিয়ে দেখতে ক্যাগ-কে নির্দেশ দিয়েছে।
নির্দেশ বলা হয়েছে, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা ত্রাণ পেয়েছেন কিনা? যদি না পেয়ে থাকেন তবে কেন পাননি? কোন পদ্ধতিতে আমফান বিপর্যস্ত এলাকায় ত্রাণ বন্টন করা হয়েছে তা খুঁটিয়ে দেখে তালিকা সহ আগামী তিন মাসের মধ্যে আদালতকে জানাতে হবে। দুর্নীতির সঙ্গে সরকারি কর্মী জড়িত থাকলে প্রসাসন তাঁর বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করেছে তাও আদালতকে জানাবে ক্যাগ। রাজ্য সরকারও হলফনামা নিয়ে আদালতে তাদের কথা জানাতে পারবে।
আমফান নিয়ে প্রশ্ন তোলায় এদিন বিজেপি ও সিপিএমের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পিএম কেয়ারের তহবিল নিয়ে কেন অডিট হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, 'ক্রমাগত অপপ্রচার করা হচ্ছে। কেন পিএম কেয়ারের তহবিল নিয়ে অডিট করচে না কেন্দ্র?' এই ইস্যুতে সিপিএমের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'দুর্নীতি নিয়ে ওদের বলতে লজ্জা হওয়া উচিত। সিপিএম নির্লজ্জ। বুদ্ধবাবু-জ্যোতিবাবুরা এরকম ছিলেন না।'
হাইকোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়। ক্যাগের তদন্তেই সব স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
চলতি বছর ২০মে ঘূর্ণিঝড় আমফানে জেরে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনও বাড়ি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হলে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়। ক্ষতিগ্রস্তদের করা আবেদনের ভিত্তিতে সেই ক্ষতিপূরণ বণ্টন করা হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, ত্রাণ বণ্টনে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। শাসক দলের নেতা এবং ঘনিষ্ঠরা বেআইনিভাবে সেই ত্রাণ পেয়েছেন। বিভিন্ন বিপর্যস্ত এলাকা থেকেও সেই খবর ছড়িয়ে পড়ে। অস্বস্তি বাড়ে মমতা সরকারের।
অসন্তোষের আঁচ বুঝেই মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করেন। দুর্নীতি করে যারা ত্রাণ নিয়েছিলেন তাদের টাকা ফেরতের নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণের আবেদনের জন্য ফের শিবির করা হয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন