Advertisment

লাগাতার 'জবরদখল' বিশ্বভারতীর জমি, অনশনে উপাচার্য সহ অধ্যাপকরা

সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত বারো ঘণ্টার প্রতীকী অনশনে বসেছেন উপাচার্য চক্রবর্তী-সহ অধ্যাপকরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

অনশনে উপচার্য্য , অধ্যাপক সহ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যায়ের আধিকারিকরা

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেট সংলগ্ন জমি দীর্ঘদিন ধরে জবরদখল করা হচ্ছে। একের পর এক দোকান গড়ে উঠেছে বিশ্বভারতীর দোরগোড়ায়। সোমবার এই জবরদখলের অভিযোগ সামনে রেখেই প্রতিবাদে সরব হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য ও অধ্যক্ষরা। এদিন সকাল আটটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত বারো ঘণ্টার প্রতীকী অনশনে বসেছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী-সহ অধ্যাপকরা।

Advertisment

সূত্রের খবর, মাস দুয়েক আগে দোকানদারদের লিখিত নোটিস পাঠিয়ে জায়গা খালি করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। এরপরে বিশ্বভারতী প্রাঙ্গনে মিছিল ও মাইক প্রচারও করা হয়। বলা হয়, 'এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি, আপনারা এই জায়গা ছেড়ে দিন'। কিন্তু, তাতেও ব্যবসায়ীরা কর্ণপাত করেননি। অবশেষে, অনশনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, অধ্যক্ষ এবং আধিকারিকদের একাংশ।  তবে এই অনশনকে সমর্থন করছেন না বিশ্ববিদ্যালেয়েরই বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী। তাঁদের বক্তব্য, "উচ্ছেদ করলে একাধিক মানুষের রোজগার ছিনিয়ে নেওয়া হবে"।

publive-image অনশনে উপচার্য্য , অধ্যাপক সহ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যায়ের আধিকারিকরা, ছবি: প্রশান্ত দাস

বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ আধিকারিক জানিয়েছেন, ২০০১ সালে ন্যাকের পর্যবেক্ষণকারী দল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য সম্পর্কে খারাপ রিপোর্ট জমা করে। সেই কথা মাথায় রেখেই ২০১৯ সালের ন্যাকের দল যাতে ভাল রিপোর্ট দেয়, সে জন্যই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই উদ্যোগ নিয়েছে। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, কবিগুরুর হস্তশিল্পী মার্কেট অনেকাংশে অপরিষ্কার এবং এখানে পলিথিন জাতীয় জিনিস ব্যবহার করে থাকেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এ জন্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য হানি ঘটছে। কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এ বিষয়ে বারবার নোটিস দেওয়া হলেও কোনও সদর্থক উত্তর না পেয়েই উপাচার্য বিদুৎ চক্রবর্তী এই কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন।

অন্যদিকে, অনশনের পাল্টা প্রতিবাদ মঞ্চ গড়ে তুলছে কবিগুরু হ্যান্ডিক্রাফিট মার্কেটের ব্যবসায়ীরাও। প্রাক্তন আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর হস্তশিল্পী দের পক্ষে বলেন,"উচ্ছেদ করলেই হবে না। ওদের জন্য একটি বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। তারপর সরে যাওয়ার অনুরোধ করা হোক। উপাচার্য কেন এই বিষয়ে অনশনের সিদ্ধান্ত নিলেন তা বুঝতে পারছি না"।

publive-image ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ মঞ্চ

বিশ্বভারতীর সাঁওতালি বিভাগের ছাত্র শুভ নাথ বলেন, "এ বছর বিশ্বভারতী ন্যাক-এ বি গ্রেড পেয়েছে। এর অন্যতম কারণ হিসাবে উপচার্য মনে করছেন, সৌন্দর্যে পিছিয়ে যাচ্ছে বিশ্বভারতী। তাঁদের বক্তব্য, বিশ্বভারতীর সামনে যে ৭০টি দোকান রয়েছে, সেই দোকান তুলে দিতে হবে। এ নিয়েই প্রতিবাদ জানাতে প্রতীকী অনশনে বসেছেন"। তিনি আরও বলেন, "দোকান তুলে দিলে বহু মানুষের জীবিকা হারিয়ে যাবে। তাই বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীদের একটা বড় অংশ চাইছে, দোকান যেমন ছিল তেমনটাই রাখতে হবে। অন্যদিকে, কিছু ছাত্রছাত্রী আবার বিশ্বভারতীর উপাচার্য ও অধ্যাপকদের দাবিকে সমর্থনও করছেন"।

ছাত্রদের একাংশ আবার মনে করছে, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী 'বিজেপির লোক', আর বীরভূমে তৃণমূলের দাপট কায়েম রয়েছে। সে জন্যই বিরোধ ক্রমশ প্রকাশ্যে আসছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বিশ্বভারতীর আশ্রম এলাকার মধ্যে বেশ কিছুটা জায়গা দখল করে গড়ে উঠেছে হস্তশিল্পের একাধিক দোকান। শুধু হস্ত শিল্পের দেকানেই থেমে নেই, সারি দিয়ে একের পর এক খাবারের দোকানও তৈরি হয়েছে। এর ফলেই বিশ্বভারতী প্রতিনিয়ত শোভা হারিয়ে ফেলছে।

shantiniketan Birbhum
Advertisment