অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর বেশ কয়েকজন আত্মীয়দের অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকার হদিশ পেল সিবিআই। ফিক্সড ডিপোসিটে থাকা ১৬ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই টাকার উৎস কী? সিবিআই গোয়েন্দাদের অনুমান, গরু পাচার মামলার সঙ্গে এই অর্থের যোগসূত্র থাকতে পারে।
সিবিআই সূত্রে খবর, একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের বোলপুর শাখায় অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর আত্মীয়দের নামে ওই ফিক্সড ডিপোজিটগুলি রয়েছে।
গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি। তাঁর বিপুল সম্মত্তির হদিশ জানতে মরিয়া সিবিআই। আসলে গরুপাচার চক্রের টাকা কোন সম্পত্তিতে ঢুকেছে তা জানতেই চলছে ম্যারাথন তল্লাশি। বুধবার সকালে অনুব্রত মণ্ডলের হিসাব রক্ষক মণীশ কোঠারিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এরপর সিবিআই অনুব্রতর বাড়িতে গিয়ে তাঁর কন্যা সুকন্যাকেও জিজ্ঞাবাদের নোটিস দেয়। যদিও মানসিক বিপর্যয়ের কথা জানিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এড়ান তিনি। এরপরই বোলপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের শাখায় যান সিবিআই আধিকারিকরা। তারপরই মেলে অনুব্রত ও তাঁর আত্মীয়দের নামে কোটি কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোসিটের সন্ধান।
আরও পড়ুন- টেট ছাড়াই চাকরি সুকন্যা সহ অনুব্রতর পাঁচ ঘনিষ্ঠের? কালই আদালতে হাজিরার নির্দেশ
এরপরই সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত্বব্যাংক কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে ওই অ্যাকাউন্টগুলিকে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। বাজেয়াপ্ত ফিক্সড ডিপোসিটগুলি কোন সময়ে কাদের নামে করা হয়ছে? টাকার উৎস কী? নগদে করা হয়েছে, নাকি কোনও অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ এসেছে? তা খতিয়ে দেখছে সিবিআই।
এ রাজ্যের বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, 'পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে ৫০ কোটি সহ বিপুল সম্পত্তির হদিশ মিলেছিলব। এবার তদন্ত এগোতেই অনুব্রতর কোটি কোটি চাকার হদিশ পাওয়া যাচ্ছে। এসব গরু পাচার, কয়লা পাচারের টাকা। আরও তল্লাশি করলে আরও অর্থ মিলবে।' সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর কটাক্ষ. 'এটাই তো তৃণমূল। পার্থ-অর্পিতা এবং অনুব্রত-র কাছে পাওয়া টাকা বাড়তে বাড়তে কোথায় গিয়ে পৌছয় দেখুন। কী আয় ছিল? শুধু লুঠের টাকা, গরুপাচারের লুঠ, সোনাপাচারের লুঠ, কয়লাপাচারের লুঠ, যাবতীয় লুঠের টাকা। রাজ্যের গোয়েন্দা তদন্তে সব ফেল? সিবিআই অনের পরে আজ বাজেয়াপ্ত করল।'
তৃণমূল মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য বলেছেন, 'ফিক্স ডিপোসিট মানে সেই অর্থের উপর আয়কর দেওয়া হয়েছে। তাই ব্যাঙ্কে রয়েছে। তদন্ত চলুক। অনেক সময়ই দেখা যায় তদন্তের শুরুতে ও শেষে পার্থক্য থাকে। এই ক্ষেত্রেও যে তা হবে না তার প্রমাণ কী?'