বেশ কিছুদিন ধরেই দিল্লিতে সিবিআইয়ের সদর দপ্তরে শীর্ষ আধিকারিকদের মধ্য়ে বিস্তর ডামাডোল চলছে। মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। এরই মধ্য়ে সল্ট লেকে সিজিওতে সিবিআই ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা দীর্ঘ এক ঘণ্টার বৈঠক করলেন পশ্চিমবঙ্গে চিটফান্ডের তদন্ত নিয়ে। সিবিআই সূত্রে খবর, সিজিওতে সিবিআইয়ের দপ্তরে এই বৈঠকে ইডির এক আধিকারিক অংশ নেন। এই কমপ্লেক্সেই রয়েছে ইডির দপ্তরও।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগ সিবিআইয়ের শীর্ষ কর্তাদের মধ্য়ে দলাদলির রেশ পৌঁছেছে কলকাতায়ও। অপসারিত রাকেশ আস্থানার ওপর দায়িত্ব বর্তেছিল চিটফান্ডের তদন্তে গতি আনার। দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি কলকাতায় এসে একগুচ্ছ নির্দেশও দিয়ে গিয়েছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেস একাধিকবার অভিযোগ করেছে যে সিবিআই, ইডি-সহ কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য়ে ব্য়বহার করা হচ্ছে।
দুর্গাপুজোর মুখে রোজ ভ্য়ালি কান্ডে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সুদীপ বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। সিবিআইও দফায় দফায় সারদা-কান্ডে অভিযুক্তদের নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছিল। অর্থাৎ রোজ ভ্য়ালি ও সারদা তদন্তে গতি বাড়িয়েছিল দুই তদন্তকারি সংস্থা। দিল্লিতে ডামাডোলের পর এখানে চিটফান্ড তদন্তের কি হাল হবে তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন এখানকার সিবিআই আধিকারিকদের একাংশ। এমনকী বদলি হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে কারও কারও মধ্য়ে।
আরও পড়ুন: সারদা-কাণ্ডে রাজ্যের চার আইপিএসকে তলব সিবিআইয়ের
ইডি ও সিবিআই আধিকারিকদের এই বৈঠক অত্য়ন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সিবিআই সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে সারদা ও রোজ ভ্য়ালি তদন্তের গতি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দুই দপ্তরের মধ্য়ে তথ্য় আদান-প্রদানও হয়েছে। এখানকার আধিকারিকরা মনে করছেন, দিল্লিতে যাই ঘটুক, চিটফান্ড কাণ্ডের তদন্ত থেমে থাকবে না। আপাতত তদন্ত প্রক্রিয়ায় একটু ধাক্কা লাগতে পারে, তবে 'টেবল ওয়ার্ক' করে রাখতেই হবে। তাই দুই দপ্তরের আধিকারিকরা হোম ওয়ার্ক করে রাখলেন। সূত্রের খবর, দুই তদন্তকারি সংস্থাই চিটফান্ড কান্ডে তলবের তালিকা প্রস্তুত করে রেখেছে।
সূত্রের খবর, চিটফান্ড মামলায় সিবিআই ও ইডি নিজেদের মধ্য়ে নথি ও তথ্য়ের লেনদেন করে। তাতে প্রমাণ আরও পাকাপোক্ত হয়। তারা মাঝেমধ্য়েই নিজেদের মধ্য়ে আলোচনা করে। সারদা ও রোজ ভ্য়ালি তদন্ত কি ভাবে এগোনো যায় তা নিয়েও তাদের মধ্য়ে আলোচনা হয়েছে। দিল্লির ঘটনা কেটে গেলেই তাদের ওপর চাপ বাড়বে। তাই সিজিও কমপ্লক্সের আধিকারিকরা নিজেদের কাজ আপ-টু-ডেট করে রাখছেন। তলব প্রক্রিয়া আপাতত বন্ধ থাকলেও শীঘ্রই রোজ ভ্য়ালি ও সারদা কান্ডে ডাকাডাকি শুরু হবে। এমনকী অন্য় চিটফান্ডগুলোর তদন্ত কি ভাবে শুরু করা যেতে পারে, তা নিয়েও একপ্রস্থ আলোচনা করেছেন দুই দপ্তরের আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, সারদা ও রোজ ভ্য়ালি ছাড়াও অন্য় চিটফান্ডগুলিতে হাজার হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারির তথ্য় রয়েছে দুই সংস্থার কাছে। সেই তদন্তেও প্রভাবশালীদের নাম জড়িয়ে আছে।