Advertisment

রাজীব কুমার মামলায় পিছু হটল সিবিআই

শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে একটি হলফনামা জমা দিয়ে দেশের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা জানাল, সারদা মামলা সংক্রান্ত নথিপত্রে কিছু "অসঙ্গতি" রয়েছে যা তারা খতিয়ে দেখছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
rajeev kumar, রাজীব কুমার

রাজীব কুমার।

‏সারদা কাণ্ডে কলকাতার প্রাক্তন নগরপাল এবং বর্তমানে রাজ্য সিআইডি প্রধান রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের ক্ষেত্রে পিছু হটল সিবিআই। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে একটি হলফনামা জমা দিয়ে দেশের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা জানাল, সারদা মামলা সংক্রান্ত নথিপত্রে কিছু "অসঙ্গতি" রয়েছে যা তারা খতিয়ে দেখছে। কিন্তু হলফনামার কোথাও উল্লেখ নেই রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে তথ্য লোপাট বা নষ্ট করার অভিযোগের, যার জেরে ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়ার দিকে নগরপালের বাসভবনে তাঁকে "জিজ্ঞাসাবাদ" করতে হাজির হয় সিবিআই-এর একটি দল।

Advertisment

প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্ট রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে তথ্য লোপাটের প্রমাণ দিয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল স্বয়ং সিবিআই ডিরেক্টর ঋষি কুমার শুক্লাকে।

শুক্রবার জমা পড়া হলফনামায় রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে তথ্য লোপাটের কোন নির্দিষ্ট প্রমাণ দিতে পারেনি সিবিআই। বরং সুর অনেকটাই নরম করে স্রেফ মামলায় বাজেয়াপ্ত মোবাইল ফোনগুলির সিডিআর (কল ডিটেলস রেকর্ড)-এ কিছু "অসঙ্গতি" আছে বলে জানানো হয়েছে হলফনামায়। সারদা মামলায় রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে সিবিআই-এর চার্জশিট জমা দেওয়ার জল্পনাতেও জল ঢেলে দিল শুক্রবারের হলফনামা, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

আরও পড়ুন: রাজীব কুমার শুধু সিআইডিরই, অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রত্যাহার

উল্লেখ্য, কলকাতায় তাঁর বাসভবনে গোয়েন্দা দলের হানার পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ফেব্রুয়ারি মাসেই মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে টানা পাঁচদিন ধরে রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। জিজ্ঞাসাবাদ পর্বে রাজীবের জন্য একগুচ্ছ প্রশ্নমালা সাজান তদন্তকারী আধিকারিকরা। দু’দিন রাজীব কুমারের সঙ্গে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ এবং সারদা কাণ্ডে জেল খাটা সাংবাদিক কুণাল ঘোষকে মুখোমুখি বসিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হয়। এরপরই জানা যায়, কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারকে জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে।

এই মামলার শেষ শুনানির দিন সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই জানিয়েছিল, রাজীব কুমার যে সারদা কাণ্ডে তথ্য লোপাট করেছেন, একথা তারা প্রথম জানতে পারে ২০১৮ সালের জুন মাসে। সেসময়েই প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানতে চায়, ততক্ষণাৎ তা প্রকাশ না করে কেন ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করল সিবিআই। গোয়েন্দা সংস্থার ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না হয়ে বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, এ ব্যাপারে তথ্য লোপাটের নির্দিষ্ট প্রমাণ সমেত হলফনামা পেশ করতে হবে সিবিআই প্রধান ঋষি কুমার শুক্লাকে।

আরও পড়ুন: বয়ান রেকর্ড শেষ, কলকাতা ফিরলেন রাজীব কুমার

সেইমতো শিলং থেকে সংগৃহীত সমস্ত ফুটেজ দেখে সিবিআই-এর শীর্ষ কর্তারা বোঝেন, ধোপে টিকবে না রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ। সেখান থেকেই শুক্রবারের হলফনামার সূত্রপাত, যা কার্যত সিবিআই-এর মুখরক্ষার একমাত্র উপায়।

২০১৬ সালে কলকাতার পুলিশ কমিশনার নিযুক্ত হন রাজীব কুমার। এর আগে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। কলকাতা পুলিশের অধীনে স্পেশাল টাস্ক ফোর্সেরও প্রথম প্রধান ছিলেন রাজীব কুমার। ২০১৩ সালে সারদা এবং রোজ ভ্যালি মামলায় বিশেষ তদন্তকারী দলের দায়িত্বে থাকার সময় গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁর তৎকালীন সরকারি বাসভবনে সিবিআই হানার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় রাজ্য রাজনীতিতে, এবং রাজ্যের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব হচ্ছে, এই দাবিতে কলকাতার মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

CBI Vs Mamata cbi
Advertisment