সারদা কাণ্ডে সিবিআই দপ্তরে আজ টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হল তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক সুব্রত বক্সীকে। এদিন তিনি চার ঘণ্টা ছিলেন সল্টলেকের সিজিওতে সিবিআইয়ের দপ্তরে। দপ্তর থেকে বেরিয়েই "রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ন" হয়েই সিবিআই তাঁকে তলব করছে বলে দাবী করেন তৃণমূল সাংসদ। "তৃণমূলকে এসব করে আটকানো যাবে না" বলেও তিনি মন্তব্য় করেন।
বেশ কিছুদিন ধরেই সারদা ও রোজ ভ্য়ালি চিটফান্ড কেলেঙ্কারি নিয়ে ফের তৎপর হয়েছে কেন্দ্রীয় দুই তদন্তকারি সংস্থা। একদিকে সিবিআই, অন্য়দিকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এর আগে রোজ ভ্য়ালি কেলেঙ্কারিতে তৃণমূল সাংসদ তাপস পালকে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন ইডির আধিকারিকরা।
সূত্রের খবর, এদিন সিবিআই দপ্তরে ঢোকার পর অত্য়ন্ত বিমর্ষ হয়ে পড়েন তৃণমূল কংগ্রেসের এই সাংসদ। এমনকী জিজ্ঞাসাবাদের সময়ও অত্য়ন্ত নার্ভাস হয়ে পড়েছিলেন তিনি। কারণ এর আগে যখন তৃণমূল ভবনে চিঠি দিয়ে তলব করা হয়েছিল, তখন তৃণমূল কংগ্রেস দাবি করেছিল সারদা কাণ্ডের সময় দলের সাধারন সম্পাদক ছিলেন মুকুল রায়। অনেক টানাপোড়েনের পরও সিবিআই দপ্তরে আসেননি সুব্রতবাবু। শেষমেশ তাঁকে এদনি সিবিআই-এর তদন্তকারি আধিকারিকদের মুখোমুখি বসতে হয়। প্রয়োজনে ফের তাঁকে তলব করা হবে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।
সিবিআই দপ্তরের বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক সুব্রত বক্সী। এদিন তিনি চার ঘণ্টা ছিলেন সল্টলেকের সিজিওতে সিবিআইয়ের দপ্তরে pic.twitter.com/pwgdqEF7J8
— IE Bangla (@ieBangla) December 10, 2018
সূত্রের আরও খবর, মূলত দলের তহবিল দেখাশোনা করতেন সুব্রতবাবু। তাই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের ছবি বিক্রি করে কত টাকা দলের তহবিলে জমা পড়েছিল তা জানতে চান তদন্তকারিরা। এমনকী ওই সব ছবির বাজারদর আদৌ কত টাকা হতে পারে, তাও জিজ্ঞাসা করা হয় ওই সাংসদকে। প্রশ্নোত্তরে দলের তহবিলের বিস্তারিত প্রসঙ্গও উঠে আসে। কিছু নথিও তাঁর সামনে তুলে ধরা হয় বলে সূত্রের খবর। সেই নথির প্রেক্ষিতেও তাঁকে বেশ কিছু প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। তাঁর বয়ান খতিয়ে দেখছে সিবিআই। জানা গিয়েছে, তদন্তকারিদের প্রশ্নের সময় সুব্রতবাবু বিরক্তিও প্রকাশ করেন এক এক সময়।
সিবিআই দপ্তর থেকে বেরিয়ে এসে সুব্রতবাবু বলেন, "পাঁচ বছর কেটে গিয়েছে তদন্তের। প্রতারিতদের টাকা ফেরত না দিয়ে মৃত্য়ুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছি। তৃণমূল কংগ্রেসকে ভয় দেখিয়ে, কালিমা লাগিয়ে কেন্দ্র বিরোধী সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই স্তব্ধ করা যাবে না। তৃণমূল কংগ্রেসকে যত ভয় দেখানো হবে তৃণমূল তত সংবদ্ধ হবে।" তাহলে কি ভয় দেখানোর জন্য়ই তাঁকে ডাকা হয়েছে? এই প্রশ্ন এড়িয়ে যান তিনি। সিবিআই সূত্রের খবর, ছবি বিক্রির ঘটনায় আরও এক তৃণমূল সাংসদ ও প্রাক্তন সাংসদকে তলব করেছে সিবিআই।