সংসদে টাকার বদলে প্রশ্ন কাণ্ডে আগেই তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে বহিস্কারের সুপারিশ করেছিল এথিক্স কমিটি। মহুয়ার সাংসদ পদ থাকবে কিনা তা নির্ধারণের কথা আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ লোকআদালত দিয়েছিল বলে আগেই দাবি করেছিলেন বিজেপি সাংসদ। শেষপর্যন্ত কৃষ্ণনগরের সাংসদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্তকাজ শুরু করল সিবিআই। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে এমনই জানা গিয়েছে।
এই তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতেই স্থির হবে সাংসদ মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি মামলা দায়ের হওয়ার বিষয়টি।
শিল্পপিত দর্শন হিরানন্দানির থেকে অর্থসহ নানা সুযোগ-সুবিধার বিনিময়ে মহুয়া মৈত্র সংসদে প্রশ্ন তুলেছিলেন বলে অভিযোগ। তৃণমূল সাংসদ লোকসভার পোর্টালের আইডি ও পাসওয়ার্ড ওই শিল্পপতির সংস্থার কাছেও দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লার কাছে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে অধ্যক্ষ সংসদের এথিক্স কমিটির কাছে পাঠায়। এরপর কমিটি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে ও আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদরাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। মহুয়াও নিজের কথা জানান এথিক্স কমিটিকে। যা নিয়ে তোলপাড় পড়ে যায় জাতীয় রাজনীতি।
অবশ্য আগোগোড়া তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মহুয়া। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকার এই ধরনের অভিযোগ তুলছে বলে দাবি করেন তৃণমূল সাংসদ। যদিও শিল্পপতি হিনান্দানি কমিটির কাছে হলফনামা দিয়ে স্বীকার করে নিয়েছেন যে, তাঁর সংস্থাকে মহুয়া মৈত্র লোকসভার পোর্টালের আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন।
সব পক্ষের সওয়াল শুনে এথিক্স কমিটি মহুয়া মৈত্রকে জাতীয় স্বার্থ বিরোধী ও নীতিহীন কাজের অভিযোগে লোকসভা থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে। এর মাঝেই সাংসদ নিশিকান্ত দুবের অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি-বিরোধী লোকপাল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই'কে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেয়। সেই সূত্রেই মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে প্রথমিত তদন্তকাজ শুরু করল সিবিআই।
উল্লেখ্য, মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্ত করছে সিবিআই। এই পর্যায়ের তদন্তে সিবিআই অভিযুক্তকে গ্রেফতার বা তাঁর বিরুদ্ধে কোনও তল্লাশি চালাতে পারবে না। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্তের থেকে নথি চাইতে পারে। সেসব নথি পরীক্ষা করে অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদও করতে পারে। মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্তের পর সেই রিপোর্ট লোকপালের কাছেই জমা দেবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।