শিলংয়ে সিবিআই দফতরে চরম নজিরবিহীন গোপনীয়তার সঙ্গে চলছে কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের জিজ্ঞাসাবাদ। সূত্রের খবর, যে ঘরে জিজ্ঞাসাবাদ প্রক্রিয়া চলছে সেখানে তদন্তকারী আধিকারিকরা ছাড়া কোনও প্রকার ইলেকট্রনিক ডিভাইসও রাখা হয়নি। এমনকি শিলং-এর সিবিআইয়ের দপ্তরের যাবতীয় কম্পিউটারও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। টিভি এবং কেবল সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এতটাই নিশ্চিদ্র ব্যবস্থা করা হয়েছে যে সেখানকার সিবিআইয়ের এসপিও ঢুকতে পারছেন না তাঁর অফিসে।
সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সবরকম ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু শিলং-এ যেহেতু এই প্রথম চিটফান্ডকাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদ প্রক্রিয়া চলছে তাই, কোনওরকম ঝুঁকি নেয়নি সিবিআই কর্তারা। এর ওপর একজন আইপিএস আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে, তাই আরও বেশি সতর্ক তদন্তকারী অধিকারিকরা।
আরও পড়ুন- সিবিআইয়ের ডাকে শিলং-এ গিয়ে গান গাইলেন কুণাল ঘোষ!
সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা বা দিল্লি নয়, রাজীব কুমারের জিজ্ঞাসাবাদ প্রক্রিয়া চলবে শিলংয়ে। জানা গিয়েছে, এই নির্দেশ দেওয়ার পরই সিবিআই-এর বিশেষ সাইবার টিম পৌঁছে যায় শিলং-এ। যে ঘরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে সেই ঘরের অভ্যন্তরীণ অবস্থা খতিয়ে দেখা হয়। সমস্ত ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস সরিয়ে ফেলা হয়। অন্য কর্মীদের অফিসে প্রবেশেও কড়াকড়ি করা হয়েছে। এরই মধ্যে সোমবারও দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে রাজীব কুমারকে। এদিন তাঁকে বসানো হয়েছিল কুণাল ঘোষের মুখোমুখি। তবে এদিনের মতো জিজ্ঞাসাবাদ প্রক্রিয়া শেষ হলেও জেরা চলবে আগামিকালও।
সূত্রের খবর, সোমবার দিনের শুরুতে প্রথমে দুজনকে পৃথক ভাবে এক ঘণ্টা করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারপরই চলেছে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা। শিলংয়ে তিন দিন ধরে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করছে কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে। সূত্রের খবর, রবিবারও কুণাল ঘোষ এবং রাজীব কুমারকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হয়েছে। সমস্ত বয়ানই রেকর্ড করেছে সিবিআই। সিবিআই সূত্রে খবর, সোমবার জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে রোজ ভ্যালির আর্থিক কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গও। মূলত সারদা কাণ্ডের তদন্তে গঠিত সিটের প্রধান হিসাবে প্রমান লোপাটের অভিযোগ উঠেছে কলকাতার বর্তমান পুলিশ কমিশানারের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন- মমতার ধর্না মঞ্চে হাজিরা: আদৌ কি পুলিশের পদক কাড়তে পারে কেন্দ্র?
সূত্রের খবর, মূলত কুণাল ঘোষের বয়ানের ওপর ভিত্তি করেই পুলিশ কমিশনারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ জন্যই একমাত্র কুণালকে শিলংয়ে তলব করে সিবিআই। এদিন প্রথমে এক ঘণ্টা জেরা করা হিয়েছে কুণালকে। তারপর এক ঘণ্টা জেরা করা হয় রাজীব কুমরাকেও। তারপরই চলে মুখোমুখি জেরা। প্রথম দিনের মতো এদিনও মোট তিন পর্যায়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, রাজীব কুমারকে প্রায় তিনশোটি প্রশ্ন করা হয়েছিল। সূত্রের খবর, তাঁর সব জবাবে খুশি নয় তদন্তকারী দল। এদিন জিজ্ঞাসাবাদের সময় সেখানে হাজির ছিলেন রোজ ভ্যালির তদন্তকারী আধিকারিকও।