পুরনিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৎপর হল সিবিআই। বুধবার কলকাতা থেকে জেলা সহ মোট ১৪ জায়গায় হানা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। জানা গিয়েছে, এদিন সকাল থেকে সল্টলেকের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে প্রথমে যায় সিবিআই গোয়েন্দাদের একটি দল। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা একাধিক দলে বিভক্ত হয়ে দমদম, দক্ষিণ ও উত্তর দমদম পুরসভা, ব্যারাকপুর, পানিহাটি, কাঁচরাপাড়া, টিটাগড়, চুঁচুড়া, শান্তিপুর সহ বিভিন্ন পুরসভাতে হানা দিয়েছে। এছাড়াও পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত অয়ন শীলের চুঁচুড়ার ফ্ল্যাটেও বাড়িতেও গিয়েছেন সিবিআই আধিকারিকরা।
ওইসব পুরসভায় ২০১৪ সালের পর কাদের চাকরি দেওয়া হয়েছিল, চাকরি দেওয়ার রেজোলিউশন, কারা কারা নিয়োগের দায়িত্বে ছিলেন তা নিয়েই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা চেয়ারপার্সন ও পুর আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলছেন বলে জানা গিয়েছে। চলছে বয়ান রেকর্ডও।
দুর্নীতির তদন্তে সিবিআইয়ের এই অভিযানকে 'রাজনৈতিক প্রতিহিংসা' বলে দাবি করেছেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, 'ত্রাস সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আমি বা আমরা অন্যায় না করলে পৃথিবীর কেউ কিচ্ছু করতে পারবে না। আসলে দেশটা গব্বর সিং চালাচ্ছে। পুরোটাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। বেশ কয়েকটা জিনিস আমার চোখে পড়ছিল, সেগুলো বাদ দিয়েছিলাম। সবটা জানা তো আমার পক্ষে সম্ভব নয়। দেখি তদন্তে কী রিপোর্ট জমা পড়ে।'
এই প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, 'ফিরহাদ হাকিম এতদিন ডিফেন্সিভ ছিলেন, হঠাৎ অ্যাটাকিং হলেন কেন? তবে যে দুর্নীতি হয়েছে তাতে উনি জড়িত। আমরা চাই সঠিকভাবে তদন্ত হোক। সত্য প্রকাশিত হোক।'
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত মার্চে প্রমোটার অয়ন শীলকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। কেন্দ্রীয় এই এজেন্সি দাবি করে, অয়নের সল্টলেকের ভাড়ার ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে রাজ্যের একাধিক পুরসভার বিভিন্ন পদে চাকরিপ্রার্থীদের ওএমআর শিট উদ্ধার হয়েছে। তাঁর সংস্থা 'এবিএস ইনফ্রোজোন' নামে অয়নের সংস্থার মাধ্যমে একাধিক পুরসভায় নিয়োগ হয়েছে। এরপরই বিষয়টি কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে উঠলে তিনি পুরসভায় দুর্নীতির মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে এই মামলার এজলাস বদল হলেও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ই বহাল রাখে কলকাতা হাইকোর্ট।
সেই নির্দেশের ভিত্তিতেই দেড় মাস আগে পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করে সিবিআই।