সপ্তাহ পার হলেই ঈদ। তার আগেই গবাদি পশু পাচার রুখতে এ রাজ্যে আসছেন জাতীয় পরিদর্শক কমিটির সদস্যরা। রাজ্যের সীমানায় গবাদি পশু পাচার ঠেকানো নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতেই মূলত আসছে জাতীয় পরিদর্শক কমিটি। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে বিহার, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশার মুখ্যসচিবদের সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন ওই পরিদর্শক দলের সদস্যরা। সম্ভবত এ সপ্তাহেই কলকাতায় আসতে পারেন ওই কমিটির সদস্যরা। গবাদি পশু পাচার ঠেকাতে চলতি বছরের ২৩ জুলাই ওই বিশেষ কমিটি তৈরি করে কেন্দ্র।
এ প্রসঙ্গে ছয় সদস্যের ওই কমিটির আহ্বায়ক এস কে মিত্তল বলেন যে, এ রাজ্যে তাঁরা কবে বৈঠক করবেন, তা এখনও স্থির করা হয়নি। তবে ঈদের আগেই যে তাঁরা এ রাজ্যে আসছেন, সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে জানিয়েছেন মিত্তল। পশু হত্যার নিরিখে বাংলার অবস্থান অত্যন্ত সংকটজনক বলেই মনে করা হচ্ছে।এ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে মিত্তল বলেন, ‘‘সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, বছরে দু থেকে আড়াই কোটি গবাদি পশু বেআইনি ভাবে পাচার করা হচ্ছে এ রাজ্যে। অন্যদিকে, প্রায় দেড় কোটি গবাদি পশু বেআইনি ভাবে পাঠানো হচ্ছে বাংলাদেশে। যদিও এটা সরকারি পরিসংখ্যান নয়। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে তারা ১ লক্ষ ৭০ হাজার গবাদি পশু উদ্ধার ও বাজেয়াপ্ত করেছিল।’’
গবাদি পশু পাচার প্রসঙ্গে মিত্তল আরও জানান,‘‘আমরা প্রথমে পড়শি রাজ্যগুলিকে নিয়ে এগোই এ বিষয়ে। কারণ, গবাদি পশু পাচার ওই রাজ্যগুলো থেকেই হয়। বাংলার গবাদি পশুগুলি সাধারণত অপুষ্টিতে আক্রান্ত, যে কারণে তাদের খুব একটা চাহিদা নেই। বাংলার কোন গরু যেখানে ১৫০ টাকায় বাজারে আনা হয়, সেখানে উত্তর ভারতের কোনও গরুকে আনা হয় ৬০০ থেকে ৭০০ টাকার বিনিময়ে। এই গরুগুলোই সাধারণত বাংলাদেশে পাচার করা হয় হত্যার জন্য।’’
আরও পড়ুন, রাজ্যে এবার কন্যাশ্রীদের জন্য নতুন বিশ্ববিদ্যালয়
ইতিমধ্যেই ওই কমিটি পটনা, জামশেদপুর, রাঁচি ও ভুবনেশ্বরে বৈঠক সেরেছে। এ ব্যাপারে মিত্তল বলেন, ‘‘গবাদি পশু পাচার ঠেকাতে প্রয়োজনীয় নজরদারি চালানোর ব্যাপারে ওই রাজ্যগুলোর সরকারের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ওঁরা বলেছেন, ওঁদের রাজ্যের বিভিন্ন বাংলা সীমানায় চেকপোস্ট বসানো হবে।’’
পশুদের উপর নিষ্ঠুরতা ঠেকাতে হেল্পলাইন খোলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ঈদের আগে গরু কেনাবেচায় লাগাম টানার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মিত্তল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমার কাছে খবর রয়েছে যে, গরু কেনাবেচার জন্য ইতিমধ্যেই অস্থায়ী বাজার খোলা হয়েছে। এ ব্যাপারে সরকারের পদক্ষেপ দরকার। যদি এ নিয়ে রাজ্য কোনও পদক্ষেপ না করে, তবে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করব এবং প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের জন্য রাজ্যপালের কাছে আর্জি জানাব।’’