আদালতের নির্দেশে পঞ্চায়েত ভোটের সুরক্ষায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনে বাধ্য হয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সেই কেন্দ্রীয় বাহিনী আদৌ বুথের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে! পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবহার নিয়ে শনিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। যা নিয়েই বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে বুথের অন্দরে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের কোনও কথা উল্লেখ নেই।
কমিশন প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় বাহিনী শুধুমাত্র মানুশের আস্থা বৃদ্ধিতে রুট মার্চ, নাকা চেকিং, ভোটের সময় সীমান্ত সুরক্ষায় কাজ করবে।
অর্থাৎ, সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে ভোটের যে দাবি বিরোধীদের, তা কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে নস্যাতের মুখে বলে মনে করা হচ্ছে। বিজেপি নেতা শিশির বাজোরিয়া এদিন কমিশন দফতর থেকে বেরিয়ে বলেন, 'কেন্দ্রীয় বাহিনী বুথের নিরাপত্তায় থাকলে শাসক দলের অসুবিধা হবে ভোট লুঠে। তাই কমিশন রাজ্য সরকারের কথা মতো কাজ করেছে। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে কমিশন কতটা শান্তিপূর্ণ ভোট করাতে ইচ্ছুক।' সিপিএমের শমিক লাহিড়ির কথায়, 'কমিশন নিরপেক্ষ নয়, শাসক তৃণমূলের তল্পি বাহক তা ফের একবার প্রমাণিত হল।' কমিশন প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার না করলে তা আদালতের নির্দেশের অবমাননা হবে বলেই দাবি বিরোধীদের৷
কেন্দ্রীয় বাহিনীকে পঞ্চায়েত ভোটে কীভাবে কাজে লাগানো হবে তা নিয়ে শুক্রবারই কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্তা, রাজ্য পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে কমিশনের বৈঠক হয়েছিল৷ তার পরেই এ দিন কমিশনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়৷ সেখানে স্পষ্ট লেখা হয়েছে, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে মূলত সাধারণ মানুষের আস্থা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করবে৷ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে, কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনীকে এরিয়া ডমিনেশন, নাকা চেকিং, ভোটারদের আস্থা বৃদ্ধির পদক্ষেপ, আন্তর্জাতিক এবং আন্তঃ রাজ্য সীমানা এলাকায় নজরদারি, রুট মার্চের জন্য ব্যবহার করা হবে৷ গোটা জেলায় ঘুরে ঘুরে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোবাইল ফোর্স হিসেবে কাজ করবে বলেও কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে৷
পঞ্চায়েত ভোটর সুরক্ষায় মোট ৪৮৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি জানিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। প্রথমে আসা ২২ কোম্পানি বাহিনী রাজ্যে কাজ করছে। ৩১৫ কোম্পানি বাহিনী শনিবারের মধ্যে এসে যাবে বলে খবর। বাকি ৪৮৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আদৌ আসবে কিনা তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। এদিন কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে ৩১৫ কোম্পানি বাহিনীকে ব্যবহারের উল্লেখ রয়েছে।