ইউক্রেন ফেরত ডাক্তারি পড়ুয়াদের নিয়ে এবার ফের কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের আবহ। দেশের শীর্ষ মেডিক্যাল শিক্ষা নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউক্রেন ফেরত ভারতীয় পড়ুয়াদের পড়ার অনুমতি না দিলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন্দ্রকে বাইপাস করে বাংলার পড়ুয়াদের সরকারি কলেজে ইন্টার্নশিপের বন্দোবস্ত করে দেওয়ার পরে সংঘাতে ঘি পড়েছে।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-কে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, যে সমস্ত পড়ুয়ারা এই পদ্ধতিতে তাঁদের শিক্ষা সম্পূর্ণ করবেন তাঁরা স্ক্রিন টেস্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। কারণ বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত পড়ুয়াদের ভারতে প্র্যাকটিসের আগে সেই স্ক্রিন টেস্ট দিতে হয়।
গত ২৮ এপ্রিল বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, সরকার ৪১২ জন ইউক্রেন ফেরত ডাক্তারি পড়ুয়াকে রাজ্যে পড়াশোনা শেষ করার বন্দোবস্ত করে দেবে। তিনি এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রকে তোপ দেগে বলেন, ভারতীয় পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের চিন্তা না করে কেন্দ্র কোনও দায়িত্ব নিচ্ছে না। ৪১২ জনের মধ্যে ১৭২ জন পড়ুয়া দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বর্ষে পাঠরত ছিলেন। তাঁরা রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি মেডিক্যাল কলেজে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস করার সুযোগ পেয়েছেন।
আরও পড়ুন বার বার আশ্বাসে বিশ্বাস তলানিতে, এবার ধরনা মঞ্চেই নোটিফিকেশনের দাবি SSC-র আন্দোলনকারীদের
মমতার ঘোষণায় কেন্দ্রীয় সরকারের আধিকারিকরা বলেছেন, জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের গাইডলাইনের পরিপন্থী এই ঘোষণা। গাইডলাইন অনুযায়ী, বিদেশে পাঠরত পড়ুয়াদের তাঁদের থিওরি এবং প্র্যাকটিক্যাল শিক্ষা শেষ করে ওই কলেজেই এক বছরের ইন্টার্নশিপ করতে হবে।
এক আধিকারিক বলেছেন, ইউক্রেন ফেরত ভারতীয় পড়ুয়াদের নিয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারি একমাত্র আছে জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের। গাইডলাইনও একেবারে স্পষ্ট। বাংলার ওই পড়ুয়ারা ফরেন মেডিক্যাল গ্র্যাজুয়েট পরীক্ষার জন্য যোগ্য হবেন না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের এক আধিকারিকের বক্তব্য, "আমরা রাজ্যগুলিকে অনুরোধ করেছি, দয়া করে কোনও দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত না নিতে ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের বিষয়ে। সরকার তাঁদের অন্য ইউরোপীয় দেশে এক কোর্সে ভর্তি করার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।" জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের অভিযোগ, বাংলার সরকার তাদের সঙ্গে কোনও কথা না বলেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
যদিও রাজ্যের স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেছেন, "আমরা প্রথমে রাজ্যে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে আসন সংখ্যা বাড়িয়েছি, তার পর ওই পড়ুয়াদের পড়ার সুযোগ করে দিয়েছি। আমাদের মনে হয় না, এতে কোনও সমস্যা হবে।"