হারিয়ে গিয়েছিল স্বাদের ছাগল টিটু। বিস্তর খোঁজা-খুঁজি, থানা, পুলিশ শেষে সেই ছাগলেরও ঘরওয়াপসি হল। মিঠুই বছর দেড়েক পর ঘরে ফিরল টিটু হয়ে। মালিক শুধু প্রিয় ছাগলই নয়, সঙ্গে পেল তার দুই সন্তানও। কিছুটা ধাঁ ধাঁ-র মতো শোনাচ্ছে? তাহলে বলা যাক আসল গল্প!
হুগলির চাঁপদানি পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা গুড়িয়া দাসের আদরের ছাগল টিটু। খেলতে খেলতে বছর দেড়েক আগে হারিয়ে গিয়েছিলো টিটু। মন খারাপ হয় টিটুর অভিভাবক ছোট্ট গুড়িয়ার। যদিও হাল ছাড়েননি সে। চসে খোঁজা-খুঁজি। কিন্তু দিন গেলেও স্বাদের ছাগলের সন্ধান মেলেনি।
এরই মধ্যে পাশের ওয়ার্ডের বাসিন্দা রাজকিশোর চৌধুরী টিটুকে দেখতে পেয়ে তার মালিকের খোঁজ শুরু করেন। কিন্তু খুঁজে না পেয়ে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন ছাগলটিকে। রাজকিশোরের স্ত্রী নিশা পরম যত্নে টিটুকে লালন পালন করতে থাকেন। ততদিনে টিটু রূপান্তরিত হয়েছে মিঠু-তে। বর্তমানে দুই সন্তানের মা সে।
আরও পড়ুন- বর্ধমানের সীতাভোগ-মিহিদানার মুকুটে নয়া পালক, মিলল ডাক বিভাগের স্বীকৃতি
এইসবের মাঝেই কেটে গিয়েছে বছর দেড়েক। সম্প্রতি ওই ছাগলের আগের মালিক গুড়িয়া জানতে পারে তাঁর টিটু চাঁপদানিতেই রয়েছে। সে পালিত হচ্ছে রাজকিশোর চৌধুরীর কাছে। খবর পেয়েই গুড়িয়া চৌধুরী বাড়িতে যায়। দাবি জানায় ছাদলটিকে ফিরিয়ে দেওয়ার। যদিও আচমকা এই দাবি মানতে রাজি হয়নি চৌধুরী পরিবার। রাজকিশোর ও তাঁর স্ত্রী মিঠুকে ছাড়তে নারাজ। এ দিকে গুড়িয়াও ছাগলের মালিকানা স্বত্ব ছাড়বে না। সেখান থেকেই দুই পরিবারের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি, বচসা, যা এক সময়ে হাতাহাতিতে রূপান্তরিত হয়। শেষ পর্যন্ত টিটুকে ফেরাতে আইনের দ্বারস্থ হয় গুড়িয়া।
সব শুনে চাঁপদানি পুলিশ ফাঁড়ির আধিকারিক বিশ্বজিত পাল পড়েন মহা সমস্যায়। অগত্যা দুই পক্ষকে নিয়েই ফাঁড়িতে বসে আলোচনাসভা। আইন মাফিক ছাগলটি যাঁর, তাঁকেই ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় পুলিশ। তখন কেঁদে লুটপুটি চৌধুরী গিন্নি। এতদিন ধরে কোলেপিঠে মানুষ করা মিঠুকে ছাড়তে মন ভেঙে যায় রাজশেখরবাবুর স্ত্রী। উল্টো ছবি গুড়িয়া ও তার পরিবারের। এ যেন যুদ্ধ জয়ের শামিল। রাজশেখরের পরিবারের তরফে মিঠুর একটি সন্তানের দাবিও সপাটে উড়িয়ে দিয়েছে গুড়িয়া। আসল চাইতে গিয়ে মিলেছে সুদের হাতছানি। কারণ, স্বাদের টিটুকেই শুধু নয়, ঘরে ফিরছে তার দুই সন্তানও। অর্থাৎ একেবারে চাঁদের হাট। অভিনব এই ঘটনার সাক্ষী থাকলো গোটা চাঁপদানি।
ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেসবাংলাএখনটেলিগ্রামে, পড়তেথাকুন