রাস্তার উপর ঠিক যেন আর একটা রাস্তা! এও কি সম্ভব? আবার সেই রাস্তার দু'ধার দিয়ে বয়ে চলেছে জল। আসলে সবই আলোছায়া। পুরোটাই 3D ছবি। ছবিই এখানে কথা বলে। হুগলির ভদ্রেশ্বরের হিন্দুস্থান পার্কের বাসিন্দাদের গর্বিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। এই এলাকায় বেশিরভাগই প্রান্তিক মানুষের বাস। এদের মধ্যে কেউ হকার, কেউ শ্রমিক। এখানকারই এক অবাঙালি যুবক চন্দন চৌধুরি রাস্তার মধ্যে ফুটিয়ে তুলছেন থার্ড ডাইমেনশন ছবি। সংক্ষেপে 3D ছবি।
Advertisment
হুগলির এতল্লাটে বেশ কয়েকটি জুটমিল আছে। যদিও তার মধ্যে আবারও একাধিক জুটমিলে তালাও ঝুলেছে। চন্দন ছোট থেকে লেখাপড়া বেশি দূর করেননি। এলাকারই একটি জুটমিলে শ্রমিকের কাজ করেছিলেন তিনি। যদিও পরবর্তী সেই জুটমিলও বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে সংসারী চন্দনের তখন তো মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার জোগাড়। বিকল্প আয়ের ভাবনা থেকেই তাঁর এই 3D ছবি আঁকার পরকিল্পনা মাথায় আসে।
চন্দন বলেন, "মোবাইল ঘাঁটার খুব শখ ছিল। সেখানে বিভিন্ন ভিডিও দেখতাম। ছবি আঁকার খুব শখ ছিল। চিন ও কোরিয়ার ছবিগুলো দেখতাম। সেখান থেকে এই থার্ড ডাইমেনশন ছবির ভিডিওগুলো দেখে অনুকরণ করার চেষ্টা করি। সেখান থেকেই আজ এই জায়গায় এসে পৌঁছেছি আমি।"
তাঁর এই বিশেষ ছবি আঁকার উপকরণ বলতে লাগে কাঠকয়লা আর বিভিন্ন রঙের চক। সঙ্গে রাখেন একটি ব্রাশ। নিজের বাড়ির গলির সামনে একফালি জায়গায় প্রথমে তিনি ছবি আঁকেন। তারই একটি ভিডিও তুলে ইউটিউবে আপলোড করেন চন্দন। রকেট গতিতে সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এ থেকেই তাঁর আয় বাড়ে। এই 3D ছবি আঁকার কাজে চন্দনকে সাহায্য করেন তাঁর স্ত্রী পুনম। স্বামী-স্ত্রী মিলে তাঁদের হিন্দুস্থান পার্কের বাড়ির গলিতে কিছুটা জায়গা জুড়ে এঁকেছেন। চন্দনের এই কীর্তিকে কুর্নিশ জানিয়েছেন এলাকাবাসীরাও।