scorecardresearch

ইতিহাস-বিশ্বাসে গড়ে উঠেছে চন্দননগরের ‘আদিপুজো’

তবে রীতি-রেওয়াজের বাইরেও বেশ কিছু ঘটনাও ঘটে ওই দিন। মন্ত্র, পুরাণ, নিয়মে যার কোনও বিশ্লেষণ হয় না। মানস সাহা বলেন, “অদ্ভুত একটি ব্যাপার ও ঘটে ওই দিন। প্রতিবার বিসর্জনের সময় একটি সাপ আসে গঙ্গার ওই ঘাটটিতে।

jagaddhatri puja 2019, chandannagar jagaddhatri puja
প্রায় তিনশো বছরের পুরোনো এই পুজো। ছবি- উত্তম দত্ত

দুর্গা এবং কালীর পুজোর রেশ যখন স্তিমিত ঠিক সেই সময়েই জগতের ধারণকর্ত্রী রূপে বঙ্গদেশে উপাস্য হন দেবী জগদ্ধাত্রী। রাজ্যে যেসব অঞ্চলে এই জগদ্ধাত্রী পুজো হয়ে থাকে, তাদের মধ্যে অন্যতম চন্দননগর। একদা ফরাসিদের বাসস্থান বলে খ্যাত চন্দননগরে এই পুজো প্রবর্তন করেন ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী। যিনি সেই সময় ছিলেন ফরাসি সরকারের দেওয়ান। প্রায় আড়াইশো বছর আগে লক্ষ্মীগঞ্জ চাউলপট্টিতে এই পুজো শুরু হয়। এটিই চন্দননগরের ‘আদি পুজো’ বলে পরিচিত।

jagaddhatri puja 2019, chandannagar jagaddhatri puja
চলছে বিশালাকৃতি জগদ্ধাত্রীকে ডাকের সাজে সাজিয়ে তোলার প্রস্তুতি। ছবি- উত্তম দত্ত

ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরির হাত ধরে চন্দননগরে এই পুজোর প্রবর্তন হলেও বর্তমানে তার বিস্তার হয়েছে মানকুন্ডু, ভদ্রেশ্বর, রিষড়াতেও। বিশালাকৃতি প্রতিমা নিয়েই এই পুজো স্বতন্ত্র তার নিজস্বতায়। জাঁকজমক বা কোনো থিমে নয়, অত্যন্ত নিষ্ঠা সহকারে লক্ষীগঞ্জ বাজারের মধ্যে নিজস্ব মন্দিরে এই দেবীর আরাধনা হয়। এই পুজোকে কেন্দ্র করে প্রচুর ভক্ত সমাগমও হয়। তবে উল্লেখযোগ্যভাবে এখনও এই পুজোয় পশুবলি প্রথা আছে। কিন্তু জগতের যিনি ধাত্রী, তাঁর আরাধনায় কেন প্রাণী হত্যা করা হয়? এ প্রশ্নের উত্তরে পুজো কমিটির সম্পাদক মানস সাহা বলেন, “এটা হয়ে আসছে প্রথম থেকেই। তবে বলির এই নিয়ম যাতে কমানো যায় সেই চেষ্টাই করে চলেছি।”

আরও পড়ুন- ডিসেম্বরেই গাঁটছড়া বাঁধছেন জুন মালিয়া!

মানসবাবু বলেন, “আমাদের পুজোর বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন বংশপরম্পরায় এখানে পুজো করেন একজন কুল পুরোহিত। আমাদের বিসর্জন এর জন্য আমাদের নিজস্ব ঘাটও আছে। সেখানে একমাত্র আমাদের ঠাকুরই বিসর্জন হয়। আগামী ৭ তারিখ দশমী। ওই দিন সারারাত শোভাযাত্রা করে পরের দিন দুপুরে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হবে। আর আমাদের পুজোর আরেকটি বিশেষত্ব হল, আমরা লরি থেকে নিজেরা কাঁধে করে প্রতিমা নামাই এবং বিসর্জন দিই। আমরা বিসর্জনের পরেই কিন্তু কাঠামো তুলি না। কাঠামো তোলা হয় পূর্ণিমার দিনে।”

jagaddhatri puja 2019, chandannagar jagaddhatri puja
গয়না, ফুলে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে চন্দননগরের প্রাচীনতম এই পুজোকে। ছবি- উত্তম দত্ত

আরও পড়ুন- ‘আমার ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে’, পেগাসাস হানার মধ্যেই বিস্ফোরক মমতা

কথায় আছে, বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর। মন্ত্র, পুরাণ, নিয়মে যার কোনও বিশ্লেষণ হয় না। তেমন সুরেই মানস সাহা বলেন, “অদ্ভুত একটি ব্যাপার ও ঘটে ওই দিন। প্রতিবার বিসর্জনের সময় একটি সাপ আসে গঙ্গার ওই ঘাটটিতে। নিরঞ্জনের পর পরই সে আমাদের প্রতিমার চারপাশে ঘুরে আবার চলে যায়।” অন্যদিকে, পুজো প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা তথা অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী স্বপন দাস বলেন, “এই প্রতিমার উচ্চতা ১৮ফুট , চালচিত্র-সহ ধরলে ২৬ ফুট উঁচু হয়। কতো মানুষ আসেন। আর প্রতিদিন সন্ধ্যায় মন্দিরের সামনে প্রবীণদের আড্ডা হয়। আমরা এই ক’টা দিনের জন্যই সারা বছর অপেক্ষা করে থাকি।”

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Westbengal news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Chandannagar jagadhatri puja chaulpatty puja 2019