চেটেপুটে লস্যিপান ‘বাবু’র! সুইমিং পুলেই দাপাদাপি জলহস্তির। সুর্যের গনগনে তাপে মানুষের পাশাপাশি কাহিল হয়ে পড়েছে চিড়িখানার পশুপাখিরাও। গরমের দাবদাহ থেকে পশুপাখিদের বাঁচাতে আলিপুর চিড়িয়াখানার প্রতি বছরের মত এবারেও বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
গরমের দাবদাহে কাহিল সাধারণ মানুষ। উত্তর থেকে দক্ষিণ তাপপ্রবাহে জেরবার শহর থেকে জেলা, গরমের ভ্রূকুটি থেকে বাদ যাচ্ছেনা বন্য পশুপাখিরাও। গরমে এমনিতেই আলিপুর চিড়িয়াখানা কার্যত দর্শক শূন্য। পাশাপাশি প্রবল গরমে কাহিল হয়ে পড়েছে শিম্পাঞ্জি থেকে বাঘ-সিংহ, হাতি, জিরাফ সহ চিড়িখানার পশুপাখিরা। এই গরমে পশুপাখিদের সুস্থ রাখাই যেন চ্যালেঞ্জ হয়ে গিয়েছে চিড়িখানা কর্তৃপক্ষের। গরমে রীতিমত কাহিল হয়ে পড়েছে তারা। আর তাদেরকে সুস্থ রাখার লক্ষ্যে তৎপরতা বেড়েছে চিড়িয়াখানার কর্মীদেরও। এতোটুকু খামতি রাখতে চাইছে না আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
তীব্র দাবদাহে নাজেহাল দশা শহর থেকে জেলা, সর্বত্র। ইতিমধ্যেই রাজ্যের একাধিক জেলার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির গণ্ডি ছুঁয়েছে। এই পর্বে আগামী কয়েক দিন তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। চলতি সপ্তাহের শুক্র ও শনিবারেও সূর্যের আগুনে মেজাজে অস্বস্তি তুঙ্গে ওঠার আশঙ্কা প্রবল। শহর কলকাতার পরিস্থিতিও মারাত্মক। গতকালই কলকাতার তাপমাত্রা প্রায় ৩৮ ডিগ্রির কাছে ছিল। আজও পরিস্থিতির তেমন বদলের সম্ভাবনা বেশ কম। আজও বেলা বাড়লেই কলকাতা শহরের রাস্তাঘাট কার্যত জনশূন্য। আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রাও ৪০-এর আশেপাশেই থাকবে। আগামী শুক্রবার পর্যন্ত কলকাতা শহরের পরিস্থিতি এমনই থাকবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।
এই গরমের হাত থেকে বন্যপ্রাণীদের স্বস্তি দিতে ইতিমধ্যেই প্রতিটি খাঁচার সামনেই বসতে চলেছে 'স্প্রিঙ্কলার', গরমে আলিপুর চিড়িয়াখানায় প্রাণীদের খাবারে বেশ কিছু রদবদলও করা হয়েছে। পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে পশু চিকিৎসকদেরও। গরমে সুস্থ থাকতে চিড়িখানার পশুদের দেওয়া হচ্ছে ওআরএস। সেইসঙ্গে খাঁচা ভিজিয়ে দেওয়া ছাড়াও করানো হচ্ছে স্নান।
এপ্রসঙ্গে আলিপুর চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর তাপস দাস বলেন, “প্রবল গরমে পশুপাখিদের সুস্থ রাখতে তাদের স্নানের পাশাপাশি ডায়েটে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। চিড়িখানায় মূল আকর্ষণ শিম্পাঞ্জি বাবু কে দেওয়া হচ্ছে লস্যি, তরমুজ জাতীয় ফল। সেই সঙ্গে গরমে কাহিল হয়ে পড়া পশুপাখিদের জল স্প্রে করে স্নান করানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে, যাতে গরমে লু লেগে না যায়। বাঘ-সিংহ রাও এখন খাঁচার সংলগ্ন জলে নেমে ঘনঘন গা ভিজিয়ে নিচ্ছে। প্রতিটি খাঁচায় বসানো হচ্ছে'স্প্রিঙ্কলার', ইতিমধ্যেই সেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে সিসিটিভি মনিটারিংয়ের মাধ্যমেও তাদের শরীরের ওপরে নজর রাখা হচ্ছে”।