রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সভার পরদিনই বিজেপির যুবমোর্চার জেলা সভাপতিকে ছুরি মারার অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার উত্তেজনা ছড়ায় বর্ধমানের ঢলদিঘি মোড়ে। দলের নেতা আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে জেলা বিজেপি সভাপতি অভিজিৎ তা-সহ বিজেপির অন্য নেতা-কর্মীরা ঢলদিঘি পৌঁছন। উত্তেজনা চরমে ওঠার আগেই পুলিশ সেখানে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ঘটনার রেশ কাটতে না-কাটতেই শনিবার বিকালে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর পালটা মিছিল করে তৃণমূল। এই মিছিলে রাজ্যের দুই মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, স্বপন দেবনাথের পাশাপাশি বর্ধমানের বিধায়ক খোকন দাস-সহ তৃণমূলের বহু নেতা ও কর্মী অংশ নেন।
আক্রান্ত বিজেপি নেতা পিন্টু শ্যাম জানান, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুক্রবার বর্ধমানে দলীয় কর্মসূচি তে যোগ দেন। সেই কর্মসূচীকে সামনে রেখে শহর বর্ধমানের বিভিন্ন রাস্তায় বিজেপির দলীর পতাকা লাগানো হয়েছিল। পিন্টু শ্যামের অভিযোগ, এদিন বেলায় তিনি যখন বাইকে চেপে বর্ধমান স্টেশনের দিক থেকে আসছিলেন, তখন দেখেন রাস্তায় বাঁধা বিজেপির দলীয় পতাকা কয়েকজন খুলে ফেলে সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা টাঙিয়ে দিচ্ছে। এমনটা দেখেই তিনি প্রতিবাদ করেন। তখনই তাঁর দিকে একজন তেড়ে আসে। ওই ব্যক্তির পিছনে আরও দু'জন ছিল। ওই ব্যক্তিদের তিনি বাধা দিতেই তারা তাঁর হাতে ছুরি চালায়। পিন্টু শ্যামের দাবি, হাতে ছুরির আঘাত খেয়েই প্রাণনাশের আশঙ্কায় তিনি কাছে এক দোকানে ঢুকে রক্ষা পান। পিন্টু শ্যাম এ-ও দাবি করেন, যে জায়গায় তিনি আক্রান্ত হয়েছেন, সেখানে সিসি ক্যামেরা আছে। পুলিশ তার ফুটেজ সংগ্রহ করলেই জানতে পারবে কারা হামলাকারী।
বিজেপির জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা বলেন, শুক্রবার বর্ধমানে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কর্মসূচি ছিল। সেই কর্মসূচিতে রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলও ছিলেন। শ্যামাপদবাবু গতকাল রাতে বর্ধমানেই ছিলেন। এদিন বেলায় শ্যামাপদবাবুকে বর্ধমান স্টেশনে ট্রেনে তুলে দিয়েই পিন্টু ফিরছিল। ওই সময়ে পিন্টু দেখে ঢলদিঘি মোড়ে কয়েকজন তাঁদের দলীয় পতাকা খুলে দিচ্ছে। এই নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে পিন্টুর ওপর তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা চড়াও হয়।
আরও পড়ুন- কোন্নগড়ে উত্তেজনা, কেন্দ্রের ফ্যাক্ট ফান্ডিং কমিটিকে রিষড়া যেতে দিল না পুলিশ
যদিও বিজেপি নেতার আনা এই সব অভিযোগ 'মিথ্যা' বলে দাবি করেছেন রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস। তিনি বলেন, 'শুক্রবারর শুভেন্দু অধিকারীর সভায় লোকজন হয়নি। তাই এইসব মিথ্যা অভিযোগ করে বিজেপি নেতারা বাজার গরম করতে চাইছেন। শনিবার তৃণমূলের পক্ষ থেকে শুভেন্দুর পালটা মিছিল আছে জেনে ওরা এইসব অভিযোগ তুলছে।' নিজেদের গোষ্ঠী কোন্দল আড়াল করতেই বিজেপি নেতারা এইসব অভিযোগ করছে কি না, তারও তদন্ত হওয়া দরকার বলেই প্রসেনজিৎ দাস মন্তব্য করেছেন।