পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় তুলকালাম কাণ্ড ঘটল শুক্রবার। রাজ্যের এক মন্ত্রীর সঙ্গে এক বিধায়কের প্রায় হাতাহাতিতে জড়ানোর পরিস্থিতির সাক্ষী থাকল বিধানসভা। পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক যে বিরোধ মেটাতে অবশেষে এগিয়ে আসতে হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এদিন ঘটনার সূত্রপাত পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে করা একটি প্রশ্নকে কেন্দ্র করে। এর জেরে উত্তেজিত হয়ে পড়েন মন্ত্রী। এরপরই ধস্তাধস্তিতে জড়ান শাসক ও বিরোধী দলের বিধায়করা। শেষমেষ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে দুপক্ষের বিবাদ মেটে। শাসক ও বিরোধী দুপক্ষকেই সতর্ক করে দিয়েছেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যপাধ্যায়।
এদিন বিধানসভায় কী হয়েছিল?
শুক্রবার তখন বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্ব চলছে। এরমধ্যেই পরবিহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে তাঁর দফতরে কর্মী নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন করেন কংগ্রেস বিধায়ক প্রতিমা রজক। তিনি পরবিহণ দফতরে নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি প্রসঙ্গে মন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন। তাঁর অভিযোগ, নিয়োগে কোনও নিয়ম মানা হচ্ছে না। নিয়োগের ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনের প্রশ্নও তোলেন প্রতিমাদেবী। জবাবে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, একেবারে ভিত্তিহীন অভিযোগ। প্রমাণ করতে না পারলে বিধানসভায় ক্ষমা চাইতে হবে প্রতিমা রজককে। এরপরই বিরোধী বিধায়করা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের প্রশ্ন, মন্ত্রী কী করে ক্ষমা চাইতে বলতে পারেন? এই এক্তিয়ার মন্ত্রীর নেই। শুভেন্দু পাল্টা বলেন, মুর্শিদাবাদের যা অবস্থা তাতে অধিকাংশ কংগ্রেস বিধায়ক তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিতে চলেছেন। পরিষদীয় প্রশ্নের প্রেক্ষিতে মন্ত্রীর এমন রাজনৈতিক মন্তব্যে ঘৃতাহুতি পড়ে গোটা ঘটনায়।
এরপরই খড়গপুরের বিধায়ক কমলেশ চট্টোপাধ্যায় সহ অন্যান্য কংগ্রেস বিধায়করা চিৎকার জুড়ে দেন সভা কক্ষে। নিরাপত্তারক্ষীকে ঠেলে সরিয়ে দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর দিকে ছুটে যান তিনি। এই সময় কংগ্রেস বিধায়কদের সঙ্গে তৃণমূলের বিধায়কদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। তখন বিধানসভায় হাজির ছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিই নিজের দলের বিধায়কদের বকাঝকা করে নিজেদের আসনে বসতে বলেন। একই সঙ্গে আসন গ্রহণ করতে অনুরোধ করেন বিরোধী বিধায়কদের। বিরক্তি প্রকাশ করেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও। পরিবহণমন্ত্রী ও বিধায়ক দুপক্ষকেই কথাবার্তায় সতর্ক হতে বলেন অধ্যক্ষ।