নিয়োগ দুর্নীতির শোরগোলের মধ্যেই ফের প্রকাশ্যে সরকারি চাকরিরতে নিয়োগ ঘিরে প্রতারণা। তৃণমূলের বোলপুরের দলীয় দফতরে পরিচয়। সরকারি চাকরির নিয়োগের জন্য শর্ত মেনে তিন ব্যক্তিকে দেওয়া হয়েছিল ২৪ লাখের বেশি টাকা। এসেছিল নিয়োগপত্রও। কিন্তু, খতিয়ে দেখতেই জানা যায় সেগুলি ভুয়ো। এরপরই টাকা ফেরৎ চাইলে প্রতারিতদের কপালেই জোটে শ্রীঘর বাসের যন্ত্রণা। পুলিশকে জানিয়েও কাজর কাজ হয়নি। দিব্যি ঘুরে বেড়েচ্ছেন প্রতারকরা। শেষ পর্যন্ত মহকুমা শাসকের দ্বারস্থ হলেন প্রতারিতরা।
চাকরি দেওয়ার শর্তে তিন প্রতারককে দেওয়া হয় লক্ষ লক্ষ টাকা। পরে ভুয়ো নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এরপরেই টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে উল্টে জেল খাটতে হয় মামা ও দুই ভাগ্নেকে। বাধ্য হয়ে বিষয়টি রামপুরহাট মহকুমা শাসককে লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন মামা আবু বাক্কার শেখ।
অভিযোগকারী আবু বাক্কার শেখ বীরভূমের পাইকর থানার হিয়াতনগর গ্রামের বাসিন্দা। ২০১৯ সালে তৃণমূলের পতাকা ধরেনদলে যোগ দেন তিনি। পরিচয় হয় বোলপুর থানার সিয়ান গ্রামের বাসিন্দা গোলাম কিবরিয়া এবং তাঁর ছেলে গোলাম এসাহাকের (রাজ) সঙ্গে। তাঁদের মাধ্যমেই পরিচয় হয় লাভপুরের বাসিন্দা আনাই শেখের সঙ্গেও। অভইযোগকারী আবু বক্করের দাবি এঁরার চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই মতো চারজনের চাকরির জন্য ২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর ২৪ লক্ষ ৩০ হাজার ওই তিন জনকে।
এরপরেই মোবাইলে দুটি নিয়োগপত্র এসেছিল। একটি পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদের প্যাডে এবং অপরটি কলকাতা পুলিশ কমিশনারের প্যাডে নিয়োগপত্র লেখা ছিল। কিন্তু যাচাই করতে গিয়ে দেখা যায় নিয়োগপত্র দুটি ভুয়ো।
ফলে মাথায় হাত পড়ে আবু বাক্কার শেখের। ২০২১ সালের ২১ অক্টোবর টাকা ফেরৎ চাইতে গেলে বোলপুর মহকুমা শাসকের কাছে ডেকে পাঠিয়ে পুলিশ দিয়ে মামা ও দুই ভাগ্নেকে গ্রেফতার করার অভিযুক্তরা। দুই মাস পর জেল থেকে মুক্তি পান তাঁরা। এরপরেই সমস্ত কাগজপত্র দিয়ে পাইকর থানায় অভিযোগ জানাতে যান প্রতারিতরা। অভিযোগ, থানার আধিকারিকরা সমস্ত কাগজপত্র নিলেও কোনও পদক্ষেপ করেনি। বাধ্য হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন আবু বাক্কার।
আবু বাক্কার বলেন, 'আমি তৃণমূল করার সুবাদে বোলপুর পার্টি অফিসে যাতায়াত করতাম। পার্টি অফিসে অভিযুক্তদের ওঠাবসা দেখে বিশ্বাস জন্মেছিল। তাই চাকরির নামে টাকা দিয়েছিল। কিন্তু টাকা না দিয়ে উল্টে আমাদের জেলে ঢুকিয়ে দিল। বিষয়টি অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ঠ শেখ ওমরকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি কোনও ব্যবস্থা নেননি। পাইকর থানাও ব্যবস্থা নেয়নি। তাই এবার রামপুরহাট মহকুমা শাসকের দ্বারস্থ হলাম।'
রামপুরহাটের মহকুমা শাসক সাদ্দাম বাভাস বলেছেন, 'অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে।'