জঙ্গলমহলে ভোট মিটতেই ছত্রধর মাহাতোকে গ্রেফতার করল এনআইএ। রাজধানী এক্সপ্রেস অপহরণ ও ২০০৯ সালে সিপিএম নেতা প্রবীর মাহাতোকে খুনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ছত্রধর মাহাতো। ২০০৯ সালে রাজধানী এক্সপ্রেস অপহরণ মামলায় UAPA আইনে ছত্রধর মাহাতোকে গ্রেফতার করেছে এনআইএ।
ঝাড়গ্রামের বাঁশতলায় ১২ বছর আগে রাজধানী এক্সপ্রেসে মাওবাদী হামলার ঘটনায় নাম জড়ায় ছত্রধরের। সেই মামলাতেই রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও বেআইনি কার্যকলাপ বিরোধী আইন বা UAPA-তে তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রাজধানী এক্সপ্রেস মামলার তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এর আগে এনআইএ-র তরফে একাধিকবার ছত্রধরকে তলব করা হয়। কিন্তু ছত্রধর তদন্তকারী সংস্থার সামনে হাজির হননি। অভিযোগ, বারবারই শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে হাজিরা এড়িয়েছেন তিনি। শেষবার ভোটের কাজে ব্যস্ততার জন্য যেতে পারবেন না বলে জানিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা ছত্রধর। অথচ বিভিন্ন রাজনৈতিক মঞ্চে উপস্থিত থাকতে দেখা যায় তাঁকে। এরপরই দিন তিনেক আগে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে তাঁকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়। ছত্রধরকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। জানা গিয়েছে, সেই নির্দেশও অমান্য করেন তৃণমূল নেতা। তারপরই শনিবার মধ্যরাতে এনআইএ ছত্রধর মাহাতোকে গ্রেফতার করে।
এদিন জঙ্গলমহলের ভোট মিটতেই লালগড়ে ছত্রধরের বাড়িতে যায় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার ৪০ জনের দল। সেখান থেকেই তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃত ছত্রধরকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এদিনই তাঁকে আদালতে তোলা হবে।
জানেশ্বরী এক্সপ্রেস নাশকতায় অন্যতম অভিযুক্ত জঙ্গলমহলের তৎকালীন জনসাধারণের কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাতো। পরে, সিপিএম নেতা প্রবীর মাহাতো খুনেও তাঁর নাম জড়ায়। ইতিমধ্যেই দশ বছরের বেশি জেলবন্দি ছিলেন ছত্রধর। ২০২০-র শুরুতে জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন ছত্রধর। এর কিছুদিনের মধ্যেই রাজ্যের শাসক দলে যোগ দেন তিনি। এমনকী তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সদস্যও করা হয় ছত্রধর মাহাতোকে। লোকসভা ভোটে জঙ্গলমহলে হারানো ভোট পুনরুদদ্ধারে ছত্রধরকে দায়িত্ব দেন তৃণমূল নেত্রী
প্রায় ১১ বছর পর শনিবার লালগড়ে স্ত্রীকে সঙ্গে ভোট দেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ছত্রধর মাহাতো। ভোটাধিকার প্রয়োগের পর তিনি জানিয়েছিলেন, রাজ্যে তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফিরতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ওইদিনই গভীররাতে এনআইএ তাঁকে গ্রেফতার করে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন