মালদায় তৃণমূলের জেলা কমিটির বৈঠকে আচমকায় চলে এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। জননেত্রীকে সামনে দেখেই সভা কক্ষে রীতিমতো দলের জেলা নেতৃত্বের মধ্যে হুলস্থুল পড়ে যায়। লোকসভা নির্বাচনের মুখে মালদার দুই কেন্দ্রের প্রার্থীদের নিয়েই রবিবার বিকাল পাঁচটায় তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব গোপন বৈঠকের আয়োজন করেছিল। আর সাড়ে পাঁচটায় হঠাৎ করেই মালদা শহরের টাউন হলেই তৃণমূলের সেই আভ্যন্তরীণ নির্বাচনী বৈঠকেই প্রবেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ।
টাউন হলের সভা মঞ্চে এসে অন্তত ১৫ মিনিট বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । সেখানেই তিনি দলের দুই লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীদের বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করার ক্ষেত্রে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জানিয়েছেন, বিজেপির প্রতারণার ফাঁদে যাতে দলের কোন নেতা-নেত্রী এবং কর্মীরা না পড়েন এব্যাপারে দুই লোকসভা কেন্দ্রের প্রতিটি বূথ স্তরে গিয়ে বিজেপির প্রতারণার ফাঁদ এড়ানোর বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে।
দলের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে , যে কোন প্রকারই হোক এবারে লোকসভা ভোটে মালদার দুটি আসন তৃণমূলকে নিতেই হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেছেন , এখানে কোনরকম সমঝোতা চলবে না। আমি সব দেখছি। ১৯ এপ্রিল থেকে এতদিন মালদায় সবকিছু তদারকি করলাম। ভোটের ফলাফল ভালো হওয়া চাই। এই আশা আমি দলের জেলা নেতৃত্বের কাছে রাখছি বলেও মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন।
এদিন বিকেলে মালদা শহরের টাউন হলে উত্তর এবং দক্ষিণ মালদা লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন ব্যানার্জি এবং শাহনাওয়াজ আলি রায়হানের উপস্থিতিতেই একটি গোপন তৃণমূলের নির্বাচনী বৈঠক হয়। সেখানেই দলের নির্বাচন কমিটি, জেলা নেতৃত্ব সহ মোট ১২২ জনের কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়েছিলেন।
তৃণমূল দলের বিধায়ক থেকে সভাপতি, চেয়ারম্যান প্রত্যেকেই এই বৈঠকে উপস্থিত হয়েছিলেন। বিকাল পাঁচটায় এই আলোচনা শুরু হওয়ার পরেই ঠিক সাড়ে পাঁচটায় আচমকায় টাউন হলে প্রবেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। যদিও এই গোপন বৈঠকে সংবাদ মাধ্যম এবং অন্যান্যদের প্রবেশের ক্ষেত্রে ছিল বিধিনিষেধ। বেশ কিছুক্ষণ আলোচনার পর হাসিমুখেই বৈঠক থেকে বেড়াতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, 'দলের দুই লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থীকে বিপুল ভোটে জয়যুক্ত করার বার্তা এদিন মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছেন। এদিন বৈঠকে হঠাৎই হাজির হন দলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি। সেখানে বিজেপির নানান ষড়যন্ত্র ও প্রতারণার স্বীকার যাতে দলের কর্মী থেকে সাধারণ সমর্থকরা না হন সেব্যাপারে প্রধান গুরুত্ব দিয়েছেন। আমরা মনে করছি আজকের এই দলীয় বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী যে বার্তা দিয়েছেন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হবে। পাশাপাশি আরও কিছু আভ্যন্তরীণ নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি দিয়েছেন। সেটা আমরা দলের মধ্যেই গোপন রেখে কাজ করার চেষ্টা করবো'।