উত্তরবঙ্গের গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবার হাল যে কতটা নড়বড়ে তা হাড়ে হাড়ে টের পেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর সফরকালেই তাঁর আবাসস্থলে একাধিকবার ব্যাহত হল বিদ্যুৎ পরিষেবা। তার জেরে ভরা সভায় ধমক খেতে হল বিদ্যুৎ দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিককে। তিন দিনের মধ্যে ঘটনার তদন্ত করে দপ্তরের সচিবের কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত ৩০তারিখ কোচবিহারে জনসভা সেরে রাতে জলপাইগুড়ি জেলার লাটাগুড়ির টিলাবাড়িতে ফেরেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই সরকারি রিসর্টে রাত্রিবাস করেন তিনি। সূত্রের খবর রাতে ওই এলাকায় চারবার বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হয়। ৩১ তারিখ জলপাইগুড়ি জেলার আধিকারিকদের নিয়ে টিয়াবনে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকেই স্থানীয় বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিকে তুলোধোনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
টিয়াবনের প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন, উৎসবের মাসেও নানা ঝামেলায় জড়িয়েছে তৃণমূল, ক্ষুব্ধ শীর্ষ নেতৃত্ব
তিনি থাকাকালীনই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষকে কী দুর্দশার মধ্যে পড়তে হয় তা তিনি বুঝতে পারছেন বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইসময়ই বৈঠকে থাকা এক ব্যক্তি মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, বিদ্যুৎ পরিষেবার জন্যে বেশি অর্থ নেওয়া হচ্ছে। এরপরেই রেগে যান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি কে দায়িত্বে আছেন তা জিজ্ঞাসা করেন। বিদ্যুৎদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক উঠে দাঁড়াতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "কী হচ্ছে? আপনারা কী পেয়েছেন কী? কেন এমন পরিষেবা হবে? কাল রাতে টিলাবাড়িতে চারবার বিদ্যুৎ গিয়েছে। কার্শিয়াংয়ে অরূপ বিশ্বাসের একই অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমার সঙ্গে হয়েছে এটা বড় কথা নয়, এরকমটা হয়েছে বলে আমি জানতে পারলাম। তা হলে সাধারণ মানুষকে কতটা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে!" মুখ্যমন্ত্রীর ধমক খেয়ে ওই আধিকারিক মাথা নিচু করেই দাঁড়িয়ে থাকেন। আরও বেশি রেগে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "হয় আপনারা গাফিলতি করছেন না হয় এখানে বেশি ইউনিয়নবাজি হচ্ছে। এসব আমি বরদাস্ত করব না। সচিবকে বলছি তিনদিনে মধ্যে রিপোর্ট দিতে।"
কয়েকদিন আগে বিদ্যুৎ পরিষেবার বেহাল দশার সম্মুখীন হতে হয়েছে পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকেও। কালিম্পংয়ে দলীয় কর্মীদের নিয়ে বিজয়া সম্মিলনী করছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে বিদ্যুৎ পরিষেবা না থাকায় মাইক কাজ করেনি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সচিব।