বয়স মাত্র দেড় বছর! সেভাবে কথাও বলতে শেখেনি ভ্রাজিষ্ণু, কিন্তু তার স্মৃতিশক্তি তাক লাগিয়েছে সকলকে। ঘর জুড়েই পরপর সাজানো একের পর এক ছবি। একবার দেখেই অনায়াসেই যে কোন ছবি মনে রেখে দিতে পারে ছোট ভ্রাজিষ্ণু।
Advertisment
মাত্র দেড়’মাস বয়স থেকেই ছেলের মনে রাখার অস্বাভাবিক ক্ষমতা লক্ষ্য করেছিলেন মা কাকলি দেবী। তাঁর কথায়, “সেই সময় থেকেই বইয়ের পাতায় থাকায় বিভিন্ন ছবিকে অনায়সেই রপ্ত করতে ফেলত ছোট ভ্রাজিষ্ণু। তারপর একটু একটু যতই করে বড় হতে লাগল মনে রাখার ক্ষমতাও ক্রমশই বাড়তে লাগল”।
এমন বিস্ময় শিশুকে নিয়ে গর্বিত এলাকাবাসীও। চুঁচুড়ার কাপাস ডাঙ্গা অঞ্চলের এই শিশু’কে এক ডাকেই চেনেই সকলে। ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ড’স থেকে মিলেছে স্বীকৃতিও। ছোট্ট শিশুর এমন কাণ্ডে গর্বিত এলাকার বিধায়কও।
বাবা দিলিপ ভট্টাচার্য পেশায় একজন ঘুড়ি বিক্রেতা। মা কাকলীদেবী গৃহবধূ। দিলীপবাবু বলেন, “ছেলের এমন মনে রাখার ক্ষমতা জানিয়ে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ড’সে পরিবারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়। সেখান থেকে ছোট ভ্রাজিষ্ণু’র বেশ কয়েকটি ভিডিও ই-মেল করতে বলা হয়। তার মাত্র মাস দেড়েকের মধ্যেই বাড়িতে পৌঁছায় ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ড’সের স্বীকৃতি”।
কেমন লাগছে এই সম্মান পেয়ে? উত্তরে বাবা দিলীপ বাবু বলেন “বাবা হিসাবে খুবই গর্ববোধ হচ্ছে। তবে অনেক প্রতিভাই অকালে নষ্ট হয়ে যায়। ছেলে যাতে তার লক্ষে পৌঁছাতে পারে তার জন্য আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব”।
ছেলের এমন সাফল্যে উচ্ছ্বসিত গোটা পরিবার থেকে পাড়া প্রতিবেশীও। বড় হয়ে ছেলেকে বিজ্ঞানী করে তুলতে চান মা কাকলীদেবী। ভ্রাজিষ্ণুর এমন স্মৃতিশক্তি এই বয়সের আর পাঁচটা শিশুর চেয়ে তাকে অনেকটাই আলাদা করে দিয়েছে।
মা কাকলিদেবীই প্রথম ছেলের এমন মেধার কথা ই-মেল মারফৎ জানিয়েছিলেন ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস কর্তৃপক্ষকে। তাঁরাই সবটা খতিয়ে দেখে ভ্রাজিষ্ণুর নাম রেকর্ড বইতে তুলেছেন। ছোট ছেলের এমন স্মৃতিশক্তি দেখে অবাক তারাও। সব থেকে ছোট শিশু’ হিসাবে এই মুহূর্তে নাম উঠেছে ভ্রাজিষ্ণুর। বাবা-মা উভয়েই চান তাদের ছেলে বড় হয়ে বিজ্ঞানী হয়ে দেশের নাম উজ্জ্বল করুক।
এবিষয়ে প্রখ্যাত শিশু সাইকোলজিস্ট তনিমা বন্দোপাধ্যায় বলেন, “বাচ্চাদের মধ্যে মনে রাখার ক্ষমতা বড়দের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। তারা ছোট থেকেই দেখেই সব কিছু রপ্ত করে ফেলে। তবে এত ছোট বয়সে ২ হাজারের বেশি ছবি এক দেখায় মনে রাখা সত্যি বিষ্ময়ের”।