চিটফান্ডের কবলে পড়ে রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মানুষ সর্বশান্ত হয়েছেন। বহু মানুষ আত্মহত্যা করেছে। ফের চিটফাণ্ডের নামে রাজ্যে টাকা তোলা শুরু হয়েছে বলে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্যাংকে টাকা রাখারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এদিকে অল বেঙ্গল চিটফান্ড সাফারার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রূপম চৌধুরীর দাবি, "এখন গ্রাম বাংলায় নানা কায়দায় বেআইনিভাবে টাকা তুলে প্রতারণা চলছে। যদি মুখ্যমন্ত্রী আমাদের কাছে জানতে চান তাহলে আমরা তথ্যপ্রমাণ দেব।"
বুধবার নবান্নে ফের চিটফাণ্ড নিয়ে সতর্কবানী শুনিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, "আজও চিটফান্ডের নামে অনেকেই গ্রাম-গঞ্জ থেকে টাকা তুলছে। কেন তাদের টাকা দিচ্ছেন? বার বার বলছি টাকা দেবেন না। রাষ্টায়ত্ত ব্যাংকে গিয়ে টাকা রাখুন। কো-অপারেটিভ ব্যাকে যান। কেন চিটফান্ডে টাকা রাখবেন?"
আরও পড়ুন- ‘যারা মামলা করছে তাঁরা সমাজবন্ধু?’ Upper Primary শিক্ষক নিয়োগ স্থগিতাদেশে ক্ষুব্ধ Mamata
ভূয়ো ভ্যাকসিন আর ভূয়ো আইএএস প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই চিটফাণ্ড প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, "চিটফান্ডের নামে আজও অনেক লোক করে খাচ্ছে। তারা খাবে, লুটপাঠ করবে। এছাড়া কয়েকটা ছবি তুলে প্রভাব খাটাবে জগতটাকে। আমি পুলিশকে বলব। এমন ধরনের গজিয়ে ওঠা কোনও অফিস, এমন গজিয়ে ওঠা মাতব্বর সমাজে উঠলে তাঁরা যেন খতিয়ে দেখে। এটা গুরুতর অন্যায়।"
এখনও সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেন, রোজভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুন্ডু সহ বিভিন্ন চিটফান্ড সংস্থার মাতব্বররা জেলহাজতে রয়েছেন। তবু যেন বেআইনি পথে টাকা তোলার বিরাম নেই। সাধারণ মানুষও সেই সব সংস্থার হাতে সঞ্চয়ের সম্বলটুকু তুলে দিচ্ছেন। যে কোনও কায়দায় টাকা হাতিয়ে নেওয়াই মুখ্য উদ্দেশ্য।
আরও পড়ুন- ‘Vaccine কিনতে দিচ্ছে না, নিজেরাও পাঠাচ্ছে না’, টিকাকরণের স্লথ গতি নিয়ে কেন্দ্রকে Mamata-র তোপ
প্রতারিতদের স্বার্থে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছে অল বেঙ্গ চিটফাণ্ড সাফারার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। এই সংগঠনের নেতৃত্বও মুখ্যমন্ত্রীর কথায় সহমত। সংগঠনের সভাপতি রূপম চৌধুরী বলেন, "বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে নানা কায়দায় অনেকে টাকা তুলছে। চিটফাণ্ডের কর্তাদের একাংশ নানা ছলনায় শেয়ার-ডিবেঞ্চার বিক্রি করছে। মাশরুম চাষের ট্রেনিং, তাতেও টাকা উঠছে। চিটফাণ্ড নামের পরিবর্তন করেই চলছে টাকার লুটপাঠ। এক দু'বছর চুপ করার পর নানা পরিবর্তন করে টাকা তোলা চলছে। আমাদের ডাকলে আমরা তথ্য-প্রমাণ দেব।"
রূপম চৌধুরী জানিয়েছেন, নিউব্যারাকপুরে একটি সোসাইটি দুবছর আগে কোটি কোটি টাকা তুলে কেটে পড়েছে। ২০১৪ সাল থেকে বিকল্প পথে টাকা তোলা হচ্ছে। একসময় রাজ্যে কমবেশি ৩৫৫-৩৫৬ চিটফাণ্ড ছিল। এদিকে চিটফাণ্ডে প্রতারিতদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য ৫০০ কোটির ফান্ড নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন