CISF in RG Kar Case: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ভাঙচুরের ঘটনার পর বিক্ষোভরত চিকিৎসকরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছিলেন। নির্যাতিতার বিচার এবং সুরক্ষা না পাওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি তাঁরা চালিয়ে যাবেন বলে অনড় ছিলেন। মঙ্গলবার আরজি কর কাণ্ডে স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় হাসপাতালের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সেই মোতাবেক বুধবার সকালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এসে পৌঁছন দুই সিআইএসএফ কর্তা-সহ আরও অনেক আধিকারিক।
এদিন সকাল ৯টা নাগাদ কেন্দ্রীয় বাহিনীর ডিআইজি কে প্রতাপ সিং ও এসপি পদমর্যাদার এক আধিকারিক হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন। আরজি কর হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনে তাঁরা প্রবেশ করেন। সূত্রের খবর, নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতেই বুধবার সকালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে যান কেন্দ্রীয় বাহিনীর আধিকারিকরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, যে কাজের জন্য তাঁরা এখানে এসেছেন তা শেষ হলেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা এই বিষয়ে বিশদে বলবেন। তবে মনে করা হচ্ছে, শীঘ্রই হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্ব সিআইএসএফ নিয়ে নেবে। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরও কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তাঁদের বক্তব্য, আগামী বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেবে সিবিআই। সেই রিপোর্ট দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত তাঁরা নেবেন।
আরও পড়ুন মনে জোর বাড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট, রাজ্যবাসীকে বিশেষ আর্জি নির্যাতিতার মায়ের
গত ৯ আগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা হয়। এর পর থেকেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয় প্রতিবাদ। বিচারের দাবিতে পথে নামেন বহু মানুষ। নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদে ১৪ আগস্ট মধ্যরাতে কলকাতা-সহ রাজ্যের সর্বত্র রাতদখলের কর্মসূচি নেন মহিলারা। শহরের বিভিন্ন জায়গায় একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ দেখান মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেকে। শান্তিপূর্ণ এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে ছন্দপতন ঘটে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের সামনে। একদল দুষ্কৃতী মিছিল থেকে জোর করে ঢুকে পড়েন হাসপাতালের ভিতরে।
পুলিশ বাধা দিলেও সেই উন্মত্ত জনতাকে আটকানো যায়নি। দুষ্কৃতীরা ঢুকে চিকিৎসকদের ধরনামঞ্চ, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় চিকিৎসকদের ধরনামঞ্চ। কার্যত অসহায়ের মতো ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ দেখে পুলিশ। পরে সাংবাদিক সম্মেলন করে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল জানান, এত সংখ্যক মানুষ জড়ো হবেন এবং হাসপাতালে হামলা চালাবেন তা ভাবতেই পারেননি তাঁরা। কার্যত নিজেদের ব্যর্থতা মেনে নেন নগরপাল।
আরজি কর হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে শীর্ষ আদালত। সামগ্রিক ঘটনায় প্রশ্ন তুলে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘প্রথমে সঠিকভাবে এফআইআর করা হয়নি। পুলিশ কী করছিল! একটা হাসপাতালের মধ্যে এত বড় ঘটনা ঘটে গেল, পুলিশ হাসপাতাল ভাঙচুর করার অনুমতি দিচ্ছিল?’
মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এটা নির্দিষ্ট কোনও ঘটনা নয়। আমরা দেশ জুড়ে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। চিকিৎসকরা যাতে নিরাপদে কাজ করতে পারেন সেই দিকটি নিশ্চিত করা দরকার।’ এরপরই হাসপাতালের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। এই নির্দেশের পরদিনই আরজি করে আসলেন দুই সিআইএসএফ আধিকারিক।