প্রাথমিকের পড়ুয়াদের অঙ্ক ও ইংরেজির বিশেষ পাঠ দেবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। এমনই উদ্যোগ নিয়েছিল বাঁকুড়া জেলা পুলিশ। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয় 'অঙ্কুর'। এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসতেই রাজ্যজুড়ে হইচই শুরু হয়। বুনিয়াদি শিক্ষার মান নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন ওঠে। শিক্ষক দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগের মাঝেই অস্বস্তি বাড়তে থাকে রাজ্য সরকারের। শেষ পর্যন্ত বাঁকুড়া পুলিশের উদ্যোগকে আপাতত স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতর।
সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে প্রাথমিকের পড়ুয়াদের পড়ানোর বিষয়টি রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের অনুমোদন সাপেক্ষ নয় বলে জানানো হয়েছে। বাঁকুড়া জেলার পুলিশ কেন এই ধরণের উদ্যোগ নিল তা জানতে চেয়েছেন রাজ্যের শিক্ষা সচিব মণীশ জৈন। তবে বিতর্কের এখানেই শেষ নয়। শিক্ষা সচিবের নির্দেশ, মনে করলে বাঁকুড়া পুলিশের তরফে সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে প্রাথমিকের পড়ুয়াদের পড়ানোর বিষয়টি প্রস্তাব আকারে স্কুল শিক্ষা দফতরে জানানো যেতে পারে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল তা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবে। অতএব, আগামিতে প্রাথমিকের পড়ুয়াদের অঙ্ক ও ইংরেজির বিশেষ পাঠ সিভিক ভলান্টিয়াররা দিচ্ছেন তা দেখতে পাওয়া গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
'অঙ্কুর' প্রকল্প নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছেন, 'বিষয়টি নিয়ে বাঁকুড়ার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্থানীয়স্তরে। যা জানতে পেরেই আমি দফতরের সচিবকে খতিয়ে দেখতে বলি। বাঁকুড়ার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপাররের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। আপাতত ওই প্রকল্প স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। আমাদের মতামত নেওয়া হয়নি। তবে বিষয়টি প্রস্তাব আকারে তাদের স্কুল শিক্ষা দফতরে জানানোর কথাও বলা হয়েছে। যা খতিয়ে দেখবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল। অনুমোদন পেলে তখন পুরোটা দেখা যাবে।' তবে কেন এই সিদ্ধান্ত আগেই ঘোষণা করা হল তা তিনি জানেন না বলে দাবি করেছেন শিক্ষামন্ত্রী।
বুধবার বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেছিলেন, 'স্কুলের পড়া শেষ হওয়ার পরে পড়ুয়াদের অঙ্ক ও ইংরেজির বিশেষ ক্লাস নেওয়া হবে। এর জন্য জেলাজুড়ে প্রায় ১৫০ জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে বেছে নেওয়া হয়েছে। বাচ্চাদের কী ভাবে পড়াতে হবে, সিভিক ভলান্টিয়ারদের সেই প্রশিক্ষণ দেবে একটি বেসরকারি সংস্থা। এই প্রকল্পের নাম অঙ্কুর।' জেলার ৪৬টি স্কুল-সহ মোট ৫৫টি কেন্দ্রকে বেছে নেওয়া হয়েছে 'অঙ্কুর' প্রকল্পের জন্য। প্রকল্পে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে জঙ্গলমহলকে।