আচমকা মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ভয়াবহ পরিস্থিতি উত্তর সিকিমের। অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গিয়েছে তিস্তা নদীর জলস্তর। জলস্তর বেড়ে বাঁধভাঙা পরিস্থিতি হয়েছে উত্তর সিকিমের চুংথাংয়ের দক্ষিণ লোনাক হ্রদে। ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারণে ইতিমধ্যেই উত্তর সিকিমের বিভিন্ন জায়গায় লাল সতর্কতা জারি করেছে সিকিম সরকার। তিস্তা নদী সংলগ্ন সিকিমের বেশ কয়েকটি গ্রাম সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সিকিমের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের তিস্তা সংলগ্ন এলাকার মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। তিস্তার জল ছাপিয়ে বন্যার আশংকা রয়েছে উত্তরবঙ্গের গাজলডোবা, দোমোহনি, মেখলিগঞ্জ, ঘিস এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায়।
Advertisment
মঙ্গলবার রাত থেকে মেঘভাঙ্গা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তর সিকিম। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রবলবর্ষণে জল অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় লোনাক হ্রদের বাঁধ ভেঙেছে। যার ফলে চুংথাংয়ে তিস্তা নদীর জলস্তর উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। নদীতে দেখা দিয়েছে হড়পা। সেই জল উপচে তিস্তার আশপাশের এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বেশ কয়েক জায়গায় সিকিমের সঙ্গে সংযোগকারী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক চলে গিয়েছে তিস্তাগর্ভে। সাংকালং, ব্রিংবং, ফিডাং, ডিকচু, মাখা, সিংটাম, রংপো, মেলি এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। মেলি বাজারে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্পূর্ণভাবে ভেসে গিয়েছে। তবে প্রশাসন তৎপর রয়েছে। উত্তরবঙ্গের তিস্তা সংলগ্ন এলাকার মানুষদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসা হচ্ছে। এসডিও-বিডিওরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন।
সিকিমের মঙ্গনের পুলিশ সুপার সোনম দেচু জানিয়েছেন, লোনাক হ্রদের বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় হাই এলার্ট জারি করা হয়েছে। নদী সংলগ্ন নীচু এলাকার বাসিন্দাদের উঁচু জায়গায় সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নদীর জলস্রোতে মঙ্গন ও চুংথাং-এর সংযোগকারী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় উত্তর সিকিমের ছোট শহর চুংথাং এখন বাকি অঞ্চল থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
গ্যাংটকের পুলিশ সুপার তেনজিং লোডেন লেপচা জানিয়েছেন, তিস্তাতীরবর্তী সিংতাম এবং রংপোর বাসিন্দাদের উঁচু এলাকায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পুরো পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। তিস্তার থাবায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের একাংশ। এর ফলে সিকিমের সঙ্গে অবশিষ্ট ভারতের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।