কেন্দ্রের 'অগ্নিপথ' প্রকল্পের বিরুদ্ধে ঘোষণার পর থেকেই বয়ে গিয়েছে অভিযোগের বন্যা। সেই তালিকায় দেশের বিভিন্ন রাজ্যের বিরোধী নেতারা সংযোজন ঘটিয়েছেন। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই মুখ খুলেছিলেন 'অগ্নিপথ'-এর প্রতিবাদে। এবার জনসভাতেও তাঁর মুখে শোনা গেল কেন্দ্রের ঘোষিত এই প্রকল্পের সমালোচনা। 'অগ্নিপথ'-এ কাজ করতে যাওয়া জওয়ানদের কর্মনিশ্চয়তার দাবি তুললেন মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার তিনি উপস্থিত ছিলেন বর্ধমানে, 'মাটি সৃষ্টি উৎসব'-এর মঞ্চে। সেখানেই 'অগ্নিপথ' নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন, গত লোকসভা নির্বাচনের আগে বিনামূল্যে গ্যাস দেওয়ার নামে উজ্জ্বলা প্রকল্প চালু করেছিল মোদী সরকার। এবার ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচন। সেদিকে তাকিয়ে চার বছরের জন্য চাকরি দিচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'চার বছরে ছ-মাস ট্রেনিং নিয়ে চাকরির মেয়াদ চার বছর। তারপরে ওই যুবকরা কোথায় যাবে? তারা কি ললিপপ খাবে? ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচন। তাই লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে চার বছরের চাকরি দেওয়া হচ্ছে। চার বছরের চাকরি দিয়ে সারাজীবন চলবে?'
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর দাবি জানান। তিনি বলেন, 'আমরা দাবি করছি, চার বছরের জন্য নয়। অগ্নিপথ প্রকল্পে চাকরির অবসরের বয়সসীমা বাড়িয়ে ৬০ বছর করতে হবে। প্রয়োজনে ৬৫ বছর করতে হবে। কারণ, আমরা শিক্ষকদের এবং অন্যান্য অনেক চাকরির ক্ষেত্রে অবসরের বয়স ৬৫ করে দিয়েছি।'
আরও পড়ুন- Agnipath Scheme: বিজ্ঞপ্তি জারির ৪ দিনেই লাখখানেক আবেদন পেল বায়ুসেনা
মুখ্যমন্ত্রী এই দাবি তোলার পর পালটা মুখ খুলেছে বিজেপি। দলের তরফে তুষারকান্তি ঘোষ সোশ্যাল মিডিয়ায় 'অগ্নিপথ' প্রকল্পের সুবিধাগুলো তুলে ধরেছেন।
পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে তিনি লিখেছেন, 'যদিও যে ব্যক্তি ভারতের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ এনে তাদের ক্ষমতার ওপর প্রশ্ন করে, তার অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে বলা কথার উত্তর দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই। কিন্তু যেহেতু তিনি একজন মুখ্যমন্ত্রী, তাই সত্য বলতে বাধ্য হলাম। সেনাবাহিনীতে ৬০ কিংবা ৬৫ বছর বয়সি ব্যক্তির পক্ষে কাজ করা সম্ভব নয়। অবশ্য যে ব্যক্তি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্ষতি করার জন্য চাকরি ক্ষেত্রে দুর্নীতি ঢুকিয়েছে এবং শিক্ষা থেকে সুরক্ষা সবই যার কাছে সিভিক, তার পক্ষে দেশের ভালো চাওয়া কখনোই সম্ভব নয়।'
এই তরজার মধ্যেই সোমবার ভারতীয় বায়ুসেনা দাবি করেছে, নথিভুক্তকরণ শুরুর মাত্র চার দিনের মধ্যেই অগ্নিপথ প্রকল্পে যোগ দিতে চেয়ে প্রায় লাখখানেক আবেদন জমা পড়েছে।