ভয়ঙ্কর তোপ বিরোধী দলনেতার। সাফ বললেন, 'বর্তমান রাজ্যপালকেও ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবং এই কাজে তিনি মরিয়া।' তবে, প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাজ ও চলার পদ্ধতির সঙ্গে বর্তমান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের পার্থক্য রয়েছে বলেই মনে করেন শুভেন্দু অধিকারী।
রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের রাজ্যপালের সঙ্গে শুরু থেকেই সুসম্পর্ক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। রাজভবন-নবান্ন সংঙ্ঘাত প্রায় অতীত। গত ২২ নভেম্বর শপথ নেওয়ার পর ইতিমধ্যেই একবার রাজভবনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যপালকে 'জেন্টেল ম্যান' বলেও সম্বোধন করেছেন। আশাপ্রকাশ করে জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকারের কাজে রাজ্যপাল সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
রাজভবন-নবান্ন 'সুসম্পর্ক' ঘিরে বিজেপির অস্বস্তি কী তাহলে বাড়ছে? শুরু হয় চর্চা। যা মাত্রা চড়ার আগেই তোপ দাগে বিস্ফোরক দাবি করলেন শুভেন্দু অধিকারী। খোলাখুলি বললেন, 'বর্তমান রাজ্যপালকেও ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবং এই কাজে তিনি মরিয়া।'
কেন এই দাবি বিরোধী দলনেতার? সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা সময় রাজ্যপাল আনন্দ বোস ও মুখ্যমন্ত্রীর বেশ কয়েকটি কথপকথোনের বিষয় তুলে ধরেছেন শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতা বলেছেন, 'আগের রাজ্যপাল ও বর্তানে ভারতের উপরাষ্ট্রপতি মননীয় জগদীপ ধনখড় মহোদয় যেভাবে আইন ও সংবিধানকে ভঙ্গ করার জন্য এই রাজ্য সরকারকে চেপে ধরছিল তাতে এই মুখ্যমন্ত্রীর কাজে অনেক সমস্যা তৈরি হচ্ছিল। তাই তিনি প্রথম দিন থেকে মরিয়া এই রাজ্যপালকে ম্যানেজ করার জন্য। ইনি একজন শিক্ষাবীদ এবং শিক্ষাবীদ, তাঁর কাজ ও চলার পদ্ধতি হয়তো ভিন্ন হতে পারে, সেটা আমি মন্তব্য করব না। কিন্তু আমি সোর্স বলব না, কারণ ওই আলোচনায় আমি ছিলাম না। রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছেন আপনার সিকিউরিটি কমিশন নোটিফিকেশন ছাড়া যাবে না। কারণ সিকিউরিটি কমিশনে যে নাম আমনি মেম্বার করেছেন তা সুপ্রিম কোর্টে পারমিশেবল নয়। স্টপ। দ্বিতীয়ত, মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যপাল বলেছেন আপনি লোকায়ুক্ত যিনি আছেন তাঁকে এক্সটেনশন দিতে চেয়েছেন, সেটাও হবে না। কারণ লোকায়ুক্ত নিয়োগ লোকপাল বিলের পার্ট, এক্সটেনশন হয় না। এটাও দিতে পারব না। রাজ্যপাল মহোদয় বলেছেন আপনি আচার্য রাজ্যপালকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে করতে চেয়েছেন। এটাও করতে পারব না কারণ ইউজিসি ও সুপ্রিম কোর্টের ডায়েরেকশন ভায়োলেশন আছে।'
শুভেন্দু আধিকারীর সংযোজন, 'তখন মুখ্যমন্ত্রী সারেন্ডার করেন রাজ্যপালের কাছে, বলেন আমি প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। আপনি আইনগতভাবে সঠিক বলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগের রাজ্যপালের সঙ্গে আমার বিরোধ ছিল তাই তাঁকে সরিয়েছিলাম। আমি আচার্য হতে চেয়েছিলাম। তবে আপনার সঙ্গে আমার বিরোধ নেই তাই আমি জোরাজুরি করবো না।'
হতে পারে নিঃশব্দে, কিন্তু রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস যে ইতিমধ্যেই নবান্নের 'সংবিধান বিরোধী' ও 'বেআইনি' একাধিক সিদ্ধান্তকে রুখে দিতে পেরেছেন তা তুলে ধরেছেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু। চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল উপর। দেখার যে, ক্রমেই রাজভবন-নবান্ন সম্পর্ক মদুর থাকে, নাকি তিক্ততার দিকেই এগোয়।